শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ , ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

দেশ

করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের সহায়তায় অস্ট্রেলিয়া-ইউএনডিপি

নিউজজি প্রতিবেদক ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ১৯:৫৭:৪০

402
  • ছবি: ফাইল

ঢাকা: কভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তা করবে অস্ট্রেলিয়া এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। এই সহায়তার আওতায় পাবর্ত্য চট্টগ্রাম, উত্তরবঙ্গ ও উপকূলীয় অঞ্চলে ২০ হাজার দরিদ্র পরিবারকে নগদ সহায়তা, চার সিটি করপোরেশনের ময়লা-আবর্জনা ও বর্জ্য অপসারণে নিয়োজিত ৫ হাজার পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিহতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা কিট দেয়া হবে।

ঢাকায় অবস্থিত ইউএনডিপি কার্যালয় থেকে বুধবার (২৯ এপ্রিল) এক বার্তায় জানানো হয়, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একযোগে কভিড-১৯ মোকাবিলায় অস্ট্রেলিয়ান ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডপি) একসঙ্গে কাজ করবে।

এর অংশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ান সরকার ও ইউএনডিপি, এটুআই প্রোগ্রামের আওতায় সামাজিক সহায়তা সম্প্রসারণে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়া হবে।

পাবর্ত্য চট্টগ্রাম, উত্তরবঙ্গ ও উপকূলীয় অঞ্চলে ইউএনডিপির চলমান প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে ২০ হাজার দরিদ্র পরিবারকে নগদ ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করবে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ এই চার সিটি করপোরেশনের শহরাঞ্চলে ময়লা-আবর্জনা ও বর্জ্য অপসারণে নিয়োজিত ৫ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে করোনা সংক্রমণ প্রতিহতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা কিটও দেয়া হবে।

বার্তায় আরো জানানো হয়, স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, এমপির কাছে ৫ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মীর জন্য ৫ হাজার ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী বুধবার (২৯ এপ্রিল) হস্তান্তর করেন ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি। এমন সময়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার জেরিমি ব্রুয়রে বলেন, অস্টেলিয়া বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে ইউএনডিপির সাথে ২০১১ সাল থেকে প্রায় একদশক ধরে যৌথভাবে কাজ করে আসছে। যার মূল লক্ষ্য দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈষম্য নিরসনের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। বাংলাদেশের কভিডবিরোধী এই লড়াইয়ে আমাদের এই যৌথ সহায়তামূলক কর্মসূচি এক্ষেত্রে আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দিন কভিড-১৯ এ সম্মুখ যোদ্ধাদের নিরাপত্তা কিট সরবরাহে গুরুত্বারোপ করে বলেন, শহরের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের গুরুত্ব শুধু শহরগুলোর বর্জ্য অপসারণেই মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, তারা যেকোনো জনস্বাস্থ্য সংকটেও লড়াই করে যাচ্ছেন। কভিড-১৯ এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এই পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সুরক্ষায় আমাদের মন্ত্রণালয়ও ইতোমধ্যে পিপিই সরবরাহ করছে। ইউএনডিপি ও অস্ট্রেলিয়ান সরকারের এ ধরনের যৌথ উদ্যোগ আমাদের প্রচেষ্টাকে আরো শক্তিশালী করেছে। আমি মনে করি, নাগরিক হিসেবে এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানো আমাদের প্রত্যেকেরই নৈতিক দায়িত্ব।

জলবায়ু পরিবর্তন ও কভিড উভয়ক্ষেত্রে বিপন্ন উপকূলের জনগোষ্ঠী এ সহায়তার আওতায় আসায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান বলেছেন, এই লড়াইয়ের অংশ হিসেবে আমরা উপকূলের বন সংরক্ষক দলের সদস্যদের জলবায়ু সহনশীল জীবিকায়নে নানা ধরনের সহায়তা প্রদান করেছি। কিন্তু করোনার উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাজারায়নের সংকটে এখন তারা তাদের পণ্যসমূহ বিক্রয় করতে পারছে না। তাই এসব দরিদ্র মানুদের দৈনন্দিন জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে এ ধরনের সহায়তা এই মুহূর্তে বিশেষভাবে সহায়ক হবে। আমি নিশ্চিত, আমরা এই যৌথ প্রচেষ্টা থেকে জলবায়ু পরিবর্তন ও মহামারি মোকাবিলা উভয়ক্ষেত্রে মূল্যবান শিক্ষা অর্জন করব।

কভিড মহামারি মোকাবিলায় সামাজিক সহায়তার গুরুত্বারোপ করে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সাথে আমাদের উন্নয়ন অংশীদারিত্ব বহুদিনের এবং এই সংকট মুহূর্তে যখন সমাজের নিম্নআয়ের মানুষদের সামাজিক সহায়তামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ তখন ইউএনডিপির পাশে অস্ট্রেলিয়ান সরকারকে পাওয়ায় আমি অস্ট্রেলিয়ান সরকারকে বিশেষভাবে প্রশংসা করি। অস্ট্রেলিয়ান সরকারের এই নতুন অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের অনেক স্বল্প আয়ের মানুষ, যাদের কভিড-১৯ এর কারণে উপার্জন বিঘ্নিত হয়েছে ও নতুনভাবে দরিদ্র হয়ে পড়েছেন তাদের কাছে পৌঁছাতে আমরা সরকারকে সহায়তা করার সুযোগ পেয়েছি।

নিউজজি/জেডকে

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন