শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ , ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার
  >
ভ্রমণ

বিভিন্ন দেশে ভিন্ন তাজমহল

নিউজজি ডেস্ক ২২ মার্চ , ২০১৭, ০১:০৬:০২

6K
  • বিভিন্ন দেশে ভিন্ন তাজমহল

ঢাকা: ভারতে আগ্রার তাজমহল। অমর প্রেমের নিদর্শন। ভালোবাসার এমন নিদর্শন পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই। ১৬৩২ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর ১৬৪৮ সাল পর্যন্ত সময় লেগেছিল। পৃথিবীর আশ্চর্যজনক স্থাপনার মধ্যে এটি একটি। প্রেম-ভালোবাসার অমর এ নিদর্শনটি ভারতে অবস্থিত হলেও এর প্রভাব পড়েছে বিশ্বজুড়ে মানুষের মনে। তাজমহলের কারুকাজ ও গঠন দেখে অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন। সপ্তদশ শতকের সেই কীর্তিকে পৃথিবীর অনেক প্রান্তেই কেউ না কেউ অনুকরণ করে চলেছে। যার ফলে বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন নামের তাজমহল গড়ে উঠেছে।

চীন তাজমহলের অনুকরণে নিজেদের মতো করে একটি তাজমহল বানিয়েছে। যার নামটা অবশ্য ভিন্ন। চীনারা তাদের বানানো তাজমহলের নাম রেখেছে ‘উইন্ডো টু দ্য ওয়ার্ল্ড’ অর্থাৎ ‘বিশ্বসুখী জানালা’। শেনজেন নামক থিম পার্কে অবস্থিত এই তাজমহলটি চীনের তাজমহল নামেও পরিচিত।

শাহজাহানের তাজমহলের অনুকরণ শুরু হয় মোঘল শাসনামল থেকেই। তার সন্তান আওরঙ্গজেব তার স্ত্রী দিলরাস বানু বেগমের স্মরণে নির্মাণ করেন ‘বিবি কা মকবরা’ স্থাপত্যটি ১৬৫১ সাল থেকে ১৬৬১ সাল পর্যন্ত সময়কালে মহারাষ্ট্রে নির্মাণ করা হয়।

আরব-আমিরাতের দেশ দুবাইতে নির্মাণ করা হচ্ছে আরেকটি তাজমহল। দুবাইয়ের তাজমহলের নাম রাখা হয়েছে ‘তাজ আরাবিয়া’। মূলত এটি একটি হোটেল। তবে এর অবকাঠামো তাজমহলের অনুকরণেই নির্মাণ করা হচ্ছে। বর্তমানে এর নির্মাণ কাজ চলছে। ২০১৭ সাল নাগাদ এর উদ্বোধন করা হবে।

মোগল শাসনামলের এই স্থাপত্যটির অনুকরণে পিছিয়ে নেই যুক্তরাষ্ট্রও। যুক্তরাষ্ট্রের তাজমহলের নাম ‘সসালিটো হাউসবোট’। এটি একটি ব্যক্তিগত তাজমহল। যার মালিক বিল হারলান নামের এক আঙুর ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ী হারলান ১৯৭০ সালের মাঝামাঝি সময়ে একবার ভারত সফরে আসেন। ভারত ভ্রমণের এক পর্যায়ে তিনি আগ্রার তাজমহলে যান। সেখানেই তাজমহলের প্রেমে পড়ে যান হারলান। মনে মনে ভাবতে থাকেন তাজমহল নির্মাণ করবেন। দেশে ফিরে নির্মাণ করেন সসালিটো হাউসবোট নামের নিজস্ব তাজমহল।

তাজমহলের অনুকরণে পিছিয়ে নেই একসময় ভারতবর্ষ শাসন করা ব্রিটিশরাও। শাহজাহানের তাজমহল প্রভাব বিস্তার করেছে ব্রিটিশদের মনের মধ্যেও। মোগল শাসনামলের এই স্থাপনার অনুকরণে ব্রিটেনে নির্মাণ করা হয়েছে ‘ব্রাইটন প্যাভিলিয়ন’ নামের একটি স্থাপনা। ওয়েলসের যুবরাজের জন্য নির্মিত এই স্থাপত্যটি সাগরপাড়ে নির্মাণ করা হয়।

বর্তমানে ভারতের ভেতরই চলছে আরেক নতুন তাজমহল নির্মাণের কাজ। উত্তর প্রদেশের এক অবসরপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টার ফয়জুল হাসান। সারাজীবনে সঞ্চয় করা অর্থ দিয়ে নির্মাণ করছেন নতুন এ তাজমহল। নতুন এই তাজমহল গড়ার পেছনেও রয়েছে সপ্তদশ দশকের প্রেম-ভালোবাসা। ভারতের উত্তর প্রদেশের বুলন্দ শহরের বাসিন্দা ৮০ বছর বয়সী ফয়জুল তার স্ত্রী তাজমুলি বেগমকে খুব ভালোবাসেন।

তাজমুলি বেগম ২০১১ সালে তাকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে যান। নিঃসন্তান ফয়জুল তার মৃত্যুপথযাত্রী স্ত্রীর কাছে ওয়াদা করেছিলেন তাজমহল নির্মাণের। সেই ওয়াদা রক্ষায় এর নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এ বৃদ্ধ। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। নতুন এ তাজমহলটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে এটিও পৃথিবীর প্রেম-ভালোবাসার আরেকটি নিদর্শন হয়ে থাকবে। যা বেঁচে থাকবে চিরকাল।

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন