রবিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১ , ২৬ রজব ১৪৪৬

দেশ

মানিকগঞ্জে বোনের পরিবর্তে চাকরি করছে ভাই

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৭:৫৯:৪২

167
  • সুরভি দত্ত ও মানস রঞ্জন দত্ত

মানিকগঞ্জ: একটি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সুরভি দত্ত। তবে প্রায় ৭ বছর ধরে তার পরিবর্তে অফিস করেন বড় ভাই মানস রঞ্জন দত্ত (স্বপন দত্ত)। জাতীয় দিবস,বিভিন্ন সভা ও ঊর্ধ্বতন কোন কর্মকর্তা পরিষদ পরিদর্শনে এলে সেদিন অফিসে আসেন সুরভি দত্ত। বোনের হয়ে বিভিন্ন সনদ ও পরিষদের কাগজপত্রে স্বাক্ষরও করেন ভাই মানস রঞ্জন দত্ত (স্বপন দত্ত)। ঠিক এমনটাই হয়ে আসছে মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদে।

গত বৃহস্পতিবার, রোববার ও সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের দায়িত্বে আছেন সুরভি দত্ত। প্রথমদিকে তিনি নিয়মিত অফিস করলেও বর্তমানে তিনি নিয়মিত অফিসে আসেন না। জাতীয় দিবস, বিভিন্ন সভা ও ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা পরিষদ পরিদর্শনে এলে সেদিন অফিসে আসেন সুরভি দত্ত। অথচ, তার ভাই মানস রঞ্জন দত্ত (স্বপন দত্ত) সচিব হিসেবে নিয়মিত অফিস করেন। পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ  সকল ধরনের কাজ করেছে  এমনকি  ইউনিয়ন  পরিষদে কর্মচারীদের হাজিরা খাতাতেও স্বাক্ষর করাতেও দেখা যায়। বৃহস্পতিবার, রোববার ও সোমবার দুপুর  একটা পর্যন্ত গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের রুমে  সুরভি দত্তের পরিবর্তে তার ভাই  মানস রঞ্জন দত্তকে সচিবের দ্বায়িত্ব পালন করতে দেখা  যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ইউপি সদস্য বলেন, আমাদের সচিব সুরভী দত্ত হলেও  অফিস  করেন  তার বড় ভাই মানস রঞ্জন দত্ত (স্বপন দত্ত)। মাঝে মধ্যে  সুরভি দত্ত অফিসে আসেন। উপজেলা  থেকে  কর্মকর্তারা আসলে ওই দিন তিনি  অফিসে  আসেন। তাছাড়া সব সময়  মানস রঞ্জন দত্তই সচিবের কাজ করেন।

গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ডেগিরচর এলাকার সোবহান মোল্লা  জানান, চাকরি তার বোনের হলেও দত্ত দাদাকেই বেশি পাওয়া যায়। দাদা যখন চাপে পরে তখন দিদি আসে। আমি যতবার পরিষদে গিয়েছি দাদাকেই পেয়েছি। গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ভুট্টো বলেন, আমরা ইউনিয়ন পরিষদে কোন কাজে গেলে  স্বপন দত্তের কাছেই  যাই। তাকে  সব সময় অফিসে  পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে সচিবের বড় ভাই মানস রঞ্জন দত্ত (স্বপন দত্ত) বলেন,চেয়ারম্যান আমাকে তার উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। সচিব সুরভি দত্ত আমার ছোট বোন। তার কাজ অনেক বেশি তাই আমার বোনকে হেল্প করি, চেয়ারম্যান আমাকে বলেছে তাকে হেল্প করার জন্য।

গোপীনাথপুর ইউনিয়নের সচিব সুরভি দত্ত বলেন, আমার কাজ অনেক বেশি তাই চেয়ারম্যান আমার দাদা কে  সহযোগী হিসেবে কাজ করার জন্য বলেছেন। চেয়ারম্যান আমার দাদাকে তার উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। আমি সব সময় অফিসে  আসি। শুধু বৃহস্পতিবার কালী মন্দিরে গিয়েছিলাম, আর আমার নাতী অসুস্থ এ জন্য  রোববার আর সোমবার অফিসে যাইতে দেরি হয়েছে।

এ ব্যাপারে গোপীনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিন মোল্লা বলেন, আমি তাকে আমার উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি। আমার ইউনিয়ন সব সময় প্রথম হয়। সচিবের কাজ  অনেক বেশি তাই সচিবের সহকারী হিসেবে কাজ করছেন তিনি।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক (উপসচিব) সানজিদা জেসমিন বলেন, আপনার কাছ থেকে বিষয়টা জানতে পারলাম, আমি এই বিষয়ে তদন্ত করব । যদি ঘটনাটি সত্যি হয়ে থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

নিউজজি/নাসি 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন