রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১ , ১৭ শাবান ১৪৪৬

দেশ

ভূরুঙ্গামারীতে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি ১২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৭:৪৯:২৫

59
  • ছবি : নিউজজি

কুড়িগ্রাম: ভূরুঙ্গামারীতে চলতি মৌসুমে সরিষা চাষের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। দিগন্তজোড়া মাঠে সরিষা ফুলের হলুদের সমারোহ শেষে ফলনের ভারে সরিষা গাছ এখন নুয়ে পড়েছে। সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় কৃষক লাভের আশায় স্বপ্ন বুনছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৩ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে কৃষক মোট ৪ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। উপজেলায় বারী ১৪, ১৭, ১৮ ও বীনা ৮, ৯, ১১ জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। এছাড়াও চলতি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনার আওতায় উপজেলার ২ হাজার ৯০০ জন কৃষককে এক কেজি করে উন্নত জাতের সরিষার বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে।

উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরিষা চাষ খুবই লাভজনক একটা আবাদ। অতি অল্প সময়ে, অল্প পুঁজিতে কৃষকরা লাভবান হন। তাই অধিকাংশ কৃষক এখন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। দুটি ফসলের মাঝে কৃষকরা সরিষা চাষের ফলনকে বোনাস হিসেবে দেখছেন।

এক সময় কৃষকরা আমন ধান কাটার পর জমি পতিত ফেলে রাখত। সময়ের সাথে সাথে সেই চিত্র এখন পাল্টে গেছে। আমন ধান কাটার পর জমিতে সরিষা লাগাতে হয়, যা মাত্র ৬০ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে ফসল কৃষক ঘরে তুলতে পারেন। এক বিঘা (৩২ শতাংশ) জমিতে সরিষা আবাদ করতে খরচ হয় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। যদি সঠিকভাবে পরিচর্চা করা যায় তাহলে প্রতি বিঘায় সরিষার ফলন হয় ৫ থেকে ৬ মণের বেশি। সরিষা কেটে একই জমিতে আবার বোরো আবাদ করা যায়।

চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে। এতে কৃষকরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি উপজেলায় সরিষার তেলের ঘাটতি কিছুটা মেটানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের বাগভান্ডার গ্রামের কৃষক শহিদুল বলেন, দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। সরিষা খেতে গেলে মৌমাছির গুঞ্জরণ দেখে মনটা ভরে যায়। আশা করি এবার সরিষার বেশ ভালো দাম পাবো।

উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের ছিটপাইকেরছড়া গ্রামের কৃষক বাহার মিয়া, এরশাদ ও মোস্তাফিজুর বলেন, আমরা দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। আশা করছি ভালো ফলন হবে। এই সরিষা বিক্রি করে বোরো আবাদের খরচ জোগাড় হয়ে যাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল জব্বার জানান, ভোজ্য তেলের উৎপাদন বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছি। কয়েক বছরের মধ্যে সরিষার তেলের উৎপাদন ৫০ শতাংশে উন্নীত করতে চাই। এই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কৃষকদের সরিষা চাষে উৎসাহিত করছি।

এছাড়াও কৃষি প্রণোদনার সার ও বীজ সঠিক সময়ে কৃষকদের কাছে পৌছে দেয়া হয়েছে। আশা করছি, প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় না ঘটলে কৃষক এবার সরিষার ভালো ফলন পাবেন।

 

নিউজজি/এসএম

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন