বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১ , ৭ শাবান ১৪৪৬

দেশ

ক্ষমতা দেয়া ও কেড়ে নেয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ: ডা. শফিকুর রহমান

দিনাজপুর প্রতিনিধি ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৬:০২:২১

205
  • ছবি : নিউজজি

দিনাজপুর: ক্ষমতা দেয়া ও কেড়ে নেয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ। রাজনীতি যারা করেন, তাদের উচিত শহিদদের রক্ত ও ত্যাগী মানুষদের প্রতি সম্মান দেখানো। চাঁদাবাজি, দখল বাণিজ্য, ঘুষখোরি এবং মানুষের ওপর জুলুম বন্ধ করতে হবে। সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে উন্নয়ন অর্থহীন।

স্বাধীনতার পর গত ৫৪ বছর, দেশে দলবাজির নামে যারা গুম, খুন, হত্যা, লুন্ঠন, ও নারী নির্যাতন সহ ফৌজদারি অপরাধ করেছে তাদের বিচার করতে হবে। বিগত সময়ে বিচার বিভাগকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে বর্তমান অন্তবর্তী কালীন সরকারের নিকট বিগত সময়ের এসব ঘটনায় যারা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে, তাদেরকে সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন বাস্তবায়ন করতে হবে। সংঘটিত অপরাধের বিচার করতে পারলে দেশের মানুষ শান্তিতে থাকতে পারবে।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় দিনাজপুর গোর-এ-শহিদ বড় ময়দানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দিনাজপুর জেলা শাখার আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াত ইসলামীর আমীর ডা. মো. শফিকুর রহমান উপরোক্ত কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরে সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থেকে দেশের সম্পদ ২৬ লাখ কোটি টাকা লুন্ঠন করে নিয়ে গেছে। শেখ হাসিনা ভেবেছিল দেশের মানুষকে যেন তেনো ভাবে ভুল বুঝিয়ে ক্ষমতায় থেকে দেশকে উন্নয়নের কথা বলে মানুষকে বোকা বানাবে। কিন্তু এদেশের মানুষ গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তার ওই সব অপকর্মের সঠিক জবাব দিয়েছে। শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে যে অপবাদ দিয়েছিল, যুব সমাজ সেই অপবাদকে শ্লোগান হিসেবে বাস্তবায়নে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের দেশ থেকে বিতারিত করতে সক্ষম হয়েছে। এখন দেশে একটি শান্তির বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। যুব সমাজের এই ত্যাগকে সকলে সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। তবেই যুব সমাজের আত্মত্যাগকে সঠিক মূল্যায়ন করা যাবে।

তিনি বলেন, এ অঞ্চলের একজন বিচারক শপথ নিয়ে নিজেকে দলীয় বিচারক হিসেবে পরিচয় দিয়ে তার শপথ তিনি ভঙ্গ করেছেন। বিচারকের শপথ ভঙ্গের জন্য তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা হওয়া উচিত। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যেসব অপরাধ জনক ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য মিথ্যা ভাবে জামায়াত ইসলামকে দায়ী করে এ দেশের নারী পুরুষ, এমনকি শিশুরা পর্যন্ত তাদের মিথ্যা মামলার দায় থেকে রক্ষা পায়নি। লক্ষ, লক্ষ মিথ্যা মামলা দিয়ে জামায়াতের কর্মীদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছিল। তাদের আক্রোশে জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের ১১ জন নেতা বরণ করেছেন। জামায়াতের ৫ জন শীর্ষ নেতাকে ফাঁসীতে ঝুলানো হয়েছে। এরপরও এই দলটি এখনো ঠিকই আছে বলে তিনি সৃষ্টিকর্তার নিকট শুকরিয়া আদায় করেন।

তিনি বলেন, জামাতের বিরুদ্ধে অপবাদ এই দলটি ক্ষমতায় আসলে নারীদের ঘর থেকে বের হতে দেয়া হবে না। কিন্তু তা আজ এই কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে ভুল প্রাণিত হয়েছে। নারীরা কর্মী সম্মেলনে যোগদান করে তাদের অবদান ঠিকই রেখেছেন। আগামী দিনে যদি সুযোগ হয় জামায়াত নির্বাচনে জয় যুক্ত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে, নারী-পুরুষ সকলের সঠিক মূল্যায়ন করা হবে।

উক্ত কর্মী সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর জেলা জামায়াতের হিন্দু ইউনিটির সদস্য বিরামপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শিশির কুমার সরকার এবং খানসামা উপজেলার নিতাই চন্দ্র দেবনাথ তাদের বক্তব্যে বলেন, ৫ আগস্টের পর জামায়াত ইসলামীর ছাত্র শিশিব ভাইয়ের আমাদের যেভাবে নিরাপত্তা দিয়ে রেখেছিলেন আমরা তাদের প্রতি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞ। সে সময়ে ইসলামী ছাত্রশিবির আমাদের পাশে না দাড়ালে আমরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হতাম। দেশের সুষ্ঠ বিচার ব্যবস্থা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে এবার ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে জামায়াত ইসলামকে ক্ষমতায় আনতে হবে। জামায়াত ইসলাম ক্ষমতায় আসলেই আমরা নিরাপদে থাকবো পারবো বলে আশা করি।

দিনাজপুর জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মো. আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে উক্ত কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মো. আব্দুল হালিম, রংপুর বিভাগীয় জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মো. মমতাজ উদ্দিন, কেন্দ্রীয় জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মো. মাহবুবুর রহমান বেলাল, ঢাকা দক্ষিণ মহানগরের সেক্রেটারী, মো. দেলোয়ার হোসাইন, ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর আব্দুল হাকিম, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মো. আনোয়ারুল ইসলাম, কর্ম পরিষদ সদস্য মো. আফতাব উদ্দিন মোল্লা, ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি দিনাজপুর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি, রাজিবুর রহমান পলাশসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। কর্মী সম্মেলনটি পরিচালনা করেন দিনাজপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ড. মুহাদ্দেস মো. এনামুল হক।

কর্মী সম্মেলনে দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলা ৯টি পৌরসভার জামায়াতের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সহ বিপুল সংখ্যক লোকজন উপস্থিত হয়ে ছিল। এছাড়াও সম্মেলনে রংপুর বিভাগের অপর ৭টি জেলার নেতাকর্মীরা সম্মেলনে উপইস্থত হয়ে ছিল বলে জেলা জামায়াতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

 

নিউজজি/এসএম

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন