শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ , ১৯ রমজান ১৪৪৫

অর্থ ও বাণিজ্য
  >
ব্যাংক-বীমা

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগসীমা বাড়ানোর নির্দেশ অর্থমন্ত্রীর

নিউজজি প্রতিবেদক ২২ মে , ২০২২, ১৯:০৫:০৬

390
  • -ফাইল ছবি

ঢাকা: পুঁজিবাজারকে এবার টেনে তুলবে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। রাষ্ট্রায়ত্ব এ প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে ব্যাংকের বিনিয়োগকে বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বৈঠকে তহবিলের মেয়াদ বাড়িয়ে আকার দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত রোববার (২২ মে) নেয়া হয়েছে।

পুঁজিবাজারে টানা দরপতনে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহর সঙ্গে বৈঠকে এসব নির্দেশ দেন অর্থমন্ত্রী।

বৈঠকে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দেন মন্ত্রী। তিনি পরিষ্কার করে বলেন, করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এ অবস্থায় পুঁজিবাজারের খারাপ অবস্থা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। যে করেই হোক বাজারকে স্বাভাবিক অবস্থায় সুন্দর ও স্থিতিশীল বাজারে পরিণত করতে হবে।

আর এ জন্য বৈঠকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এবং আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

পুঁজিবাজার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে বেশ কিছু মতপার্থক্যের ইস্যু ধরেই গত সেপ্টেম্বর থেকে সংশোধন শুরু হয়। পরে যোগ হয় ইউক্রেন যুদ্ধ, জ্বালানি ও খাদ্যমূল্যের দর বৃদ্ধি, মুদ্রার দরপতন, শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক ধসসহ নানা বৈশ্বিক ইস্যু।

এই পরিস্থিতিতে বৈঠকে পুঁজিবাজারে সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবিকে বাজারে সব ধরনের সহায়তা দেয়ার নির্দেশও দেয়া হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন থেকে ব্যাংকগুলো আইসিবির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে যে বিনিয়োগ করবে, সেটাকে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমার (এক্সপোজার লিমিট) বাইরে রাখা হবে।

গত কয়েক বছর ধরেই পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। একটি ব্যাংক কত টাকা বিনিয়োগ করতে পারে, তাকে বলে এক্সপোজার লিমিট।

বর্তমানে কোনো শেয়ারের ক্রয়মূল্য অথবা বাজারদর যেটি বেশি, সেটি এক্সপোজার লিমিট হিসেবে গণ্য হয়। তবে বিএসইসি চাইছে এটি শেয়ারের ক্রয়মূল্যে নির্ধারণ হোক।

আবার কোনো ব্যাংক নিজে যে বিনিয়োগ করে, সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য যে টাকা দেয়, আইসিবিকে যে ঋণ দেয়, সবই এক্সপোজার লিমিটের ভেতরে পড়ে।

এ ছাড়া ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আইসিবিকে দেয়া ১৫৩ কোটি টাকার যে তহবিলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, সেটির মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তহবিলের আকারও বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা করা হবে।

বৈঠকে উপস্থিত একজন কর্মকর্তা বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন, মহামারি করোনার মধ্যেও আমাদের অর্থনীতি ভালো ছিল। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফসহ অনেক দাতা সংস্থা আমাদের প্রশংসা করেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও আমরা ভালো আছি। এ অবস্থায় পুঁজিবাজার খারাপ যাবে, সেটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলো বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মন্ত্রী বিশ্বাস করেন।

এসব পদক্ষেপের ফলে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছেন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাক আহমেদ সাদেকও।

এ পরিস্থিতিতে বাজারে তারল্য বাড়াতে মার্জিন ঋণের সীমা বাড়িয়ে ১:১ করা হয়েছে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের যত টাকা রয়েছে, তারা সমপরিমাণ ঋণ নিতে পারবেন। এতদিন এটি ছিল ১:০৮। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা ১০০ টাকার বিপরীতে ৮০ টাকা ঋণ নিতে পারতেন।

নিউজজি/শানু

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন