শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ , ১৯ রমজান ১৪৪৫

বিনোদন

স্বর্ণযুগের সংগীতস্রষ্টা কমল দাশগুপ্ত

নিউজজি প্রতিবেদক  জুলাই ২৮, ২০২১, ১৬:১৪:৩৯

298
  • কমল দাশগুপ্ত। ছবি: ইন্টারনেট

ঢাকা : ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রথিতযশা সঙ্গীতশিল্পী, প্রসিদ্ধ সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক কমল দাশগুপ্তের জন্মদিন আজ। ১৯১২ সালের আজকের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

উপমহাদেশের সংগীত সূর্য কমল দাশগুপ্ত যশোরের কৃতি সন্তান। কমল দাশগুপ্তের পৈত্রিক নিবাস তৎকালীন যশোর জেলার নড়াইল মহকুমার (বর্তমান জেলা) কালিয়া থানার বেন্দাগ্রামে। ব্যবসাজীবী পিতা তারাপ্রসন্ন দাশগুপ্তের কুচবিহারে অবস্থানকালে ১৯১২ খ্রীষ্টাব্দের ২৮ জুলাই কমল দাশগুপ্তের জন্ম হয়।

১৯৬৫ সালে ফরিদপুর জেলার খান বাহাদুর ইসমাইল হোসেনের কন্যা উপমহাদেশের প্রখ্যাত নজরুল সংগীত শিল্পী ফিরোজা বেগমের সঙ্গে কমল দাশগুপ্তের বিবাহ সুসম্পন্ন হয়। এই মহতি শিল্পী সমগ্র জীবনব্যাপী নজরুল সংগীত পরিবেশন ও গবেষণা করে তাঁর শিক্ষাগুরু কাজী নজরুল ইসলামও তাঁর স্বামী কমল দাশগুপ্তের প্রতি যে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন, বাংলা সংস্কৃতির ইতিহাসে তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

ত্রিশ এবং চল্লিশের দশকে গ্রামোফোন ডিস্কে তার সুরে গাওয়া বহু গান অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। গানগুলোর গীতিকার ছিলেন প্রণব রায় এবং কণ্ঠশিল্পী ছিলেন যুথিকা রায়। ‘সাঁঝের তারকা আমি’, ‘আমি ভোরের যুথিকা’ প্রভৃতি গান আজও সমাদৃত। তার কয়েকটি রাগাশ্রিত, কীর্তনাঙ্গ এবং ছন্দ-প্রধান গানও বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

শিক্ষাজীবন

১৯২৮ খ্রীষ্টাব্দে কমল দাশগুপ্ত ক্যালকাটা একাডেমী থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরবর্তীতে তিনি কুমিল্লা  ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে বি. কম পাস করেন। ‘মীরার ভজন’ এর সুরারোপের জন্যে ১৯৪৩ খ্রীষ্টাব্দে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমল দাশগুপ্ত ‘ডক্টরস অব মিউজিক’ ডিগ্রী লাভ করেন ।

সঙ্গীতজীবন

কমলের পিতা তারাপ্রসন্ন দাশগুপ্ত ভাল ধ্রম্নপদী গাইতেন। কমল দাশগুপ্তের ভাই-বোনেরা সকলেই কন্ঠ শিল্পী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত ছিলেন। পারিবারিক অনুকূল পরিবেশেই কমল দাশগুপ্তের সংগীতশিক্ষার ভিত্তি রচিত হয়েছিল।

কমল দাশগুপ্তের আনুষ্ঠানিক সংগীত শিক্ষার সূচনা হয় নিজগৃহে দাদা বিমল দাশগুপ্তের কাছে। এরপর শ্রী রামকৃষ্ণ মিশ্র ও দিলীপ কুমার রায়ের কাছে কিছুদিন গানের তালিম নেন। এ সময় তিনি দিলীপ কুমার রায়ের সংগীত দলের সদস্য হয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে গান শোনাতে গিয়েছিলেন। 

অন্ধ গায়ক শ্রী কৃষ্ণ চন্দ্র দে’র কাছে তিনি কয়েক বছর সংগীত শিক্ষা লাভ করেন। ঠুংরীরাজ ওস্তাদ জমিরউদ্দীনের প্রিয় পাত্র ছিলেন তিনি। ওস্তাদ জমিরউদ্দিন খাঁ ১৯৩৯ খ্রীষ্টাব্দে মারা যান। তিনি মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত কমল দাশগুপ্তকে উচ্চাঙ্গ সংগীতে তালিম দিয়েছিলেন। 

কমল দাশগুপ্তের বাড়িতে নিয়মিত সংগীতের আসর বসতো। এই সকল আসরে উপস্থিত থাকতেন তখনকার বিখ্যাত গায়কদের মধ্যে কমল দাশের বড় ভাই বিমল দাশগুপ্ত, শ্রী তুলসী লাহিড়ী, শ্রী শচীনদেব বর্মন, কবি শৈলেন রায়, ওস্তাদ জমিরউদ্দিন খাঁ, আব্বাসউদ্দীন ও শিশুশিল্পী কমল দাশগুপ্ত।

ত্রিশের দশকের পূর্বে মনোমুগ্ধকর বাংলা গানের অস্তিত্ব ছিল না বললেই চলে। এ সময় রবীন্দ্র সংগীত সবেমাত্র বেতার ও গ্রামোফোন রেকর্ডের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা লাভ করতে শুরু করেছে। কাজী নজরুল ইসলামের গান শৈশব কাটিয়ে তখনও ব্যাপক প্রসার লাভ করেনি।

বাংলা গানেরও প্রারম্ভে কয়েকজন প্রতিভাশালী সংগীতজ্ঞের আবির্ভাব বাংলা গানের জগৎকে সমৃদ্ধশালী ও জনপ্রিয় করে তোলে। তাঁদের মধ্যে দিলীপ কুমার রায়, রাইচাঁদ বড়াল, পঙ্কজ কুমার মল্লিক, সুর সাগর হিমাংশু দত্ত, শচীনদেব বর্মন, গীতিকার ও সুরকার অনিল ভট্টাচার্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

কমল দাশগুপ্তের বড় ভাই বিমল দাশগুপ্ত এ সময়ে গ্রামোফোন কোম্পানীর একজন ট্রেনার ছিলেন। ভাইয়ের সঙ্গে কমল প্রায়ই গ্রামোফোন কোম্পানীতে যেতেন। ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে গ্রামোফোন কোম্পানীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ তিনি সমাধা করে দিতেন। বিশেষ করে নতুন নতুন সুরারোপ ও রেকর্ডিং এর কাজগুলি। এ ভাবেই গ্রামোফোন কোম্পানীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পায় এবং ১৯৩২ সালে তিনি নিজের সুরারোপিত গানের রেকর্ড করার সুযোগ পান। তাঁর প্রথম সুরারোপিত গানের গায়ক ছিলেন সত্যবতী।

গান মালা গেঁথে গেঁথে-

কতকাল আছি চেয়ে চেয়ে

এর কিছুদিন পর তাঁর স্বকণ্ঠে দুটি বাংলা গজল রেকর্ড করা হয়। গজল দুটির প্রথম লাইন :

কোন স্বপ্ন লেগেছে আমার-

কত জ্বালা সব বলনা-

কমল দাশগুপ্ত যখন কলকাতা বেতার ও হিজ মাস্টারস ভয়েসের তরম্নণ শিল্পী; তখন আধুনিক বাংলা গানের দৈন্যদশা তাঁর শিল্পীমনকে ব্যথিত করে তোলে। এই সময় তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে সৃষ্টি করেন এক নতুন সুরের ধারা। যেখানে তিনি একেবারে স্বতন্ত্র।

১৯৩২ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত তিনি গ্রামোফোন রেকর্ড ও চলচ্চিত্র মিলিয়ে চার হাজারের অধিক গানে সুরারোপ করেছেন এবং অসংখ্য গানে কণ্ঠও দিয়েছেন। বাংলা এবং হিন্দি গানের সব ভুবনেই বিচরণ করেছেন তিনি। উর্দু ভাষার উপরও তাঁর ছিল বিশেষ পারদর্শিতা। শ্রীমতি যুথিকা রায় ও কমল দাশের দ্বৈত উর্দুতে গাওয়া না’ত ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। হিন্দীতেও তিনি গীত ও ভজন রচনা করেছেন প্রচুর। ঠুংরী সৃষ্টিতেও তাঁর অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। সুরের জগতে রাগরাগিণীর উপর অবাধ বিচরণ ছিল তাঁর।

দক্ষিণভারতের বিখ্যাত গায়িকা শ্রীমতি শুভলক্ষ্মীর কণ্ঠে কমল দাশগুপ্তের সুরারোপিত বিখ্যাত  ‘মে নিরগুনিয়া গুন নেহী’ ভজনটি ব্যাপক সুখ্যাতি অর্জন করেছিল। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে তাঁর সুরারোপিত হিন্দীগান ‘ও প্রীত নেভানেওয়ালী’ এবং ‘কিতনে দুখ্ ভুলায়া তুমনে’ গান দু’টি শ্রোতাদের মনে আশ্চর্য রকম প্রভাব বিস্তার করে। 

‘যদি ফিরে দেখা হয় সহসা’ ঠুংরী সৃষ্টি তাঁর একটি কালজয়ী সৃষ্টি। ‘চুপকে চুপকে বোল ময়না’ সুরারোপিত রেকর্ডের গানটি লক্ষাধিক কপি বিক্রয় হয়েছিল। এভাবেই তাঁর সুরারোপিত বিভিন্ন ধরণের ও বিভিন্ন ভাষার গানগুলি অনাদিকাল ধরে সংগীত পিপাসুদের হৃদয় আঁকড়ে থাকবে।

বাংলা সংগীত কাননে চিরবিরাজমান সুরসম্রাট কমল দাশগুপ্ত আপন প্রতিভাবলে সুরের মহিমায় ফুটিয়েছেন অসংখ্য পুষ্পরাজি। কমল দাশগুপ্তের সুরারোপিত গানগুলি মোহিত করেছে জগৎ ও জীবনকে।

ভারতীয় সামরিক বাহিনীর রণসংগীত ‘কদম কদম বাড়ায়ে যা’ সঙ্গীতটির সুরকার কমল দাশগুপ্ত। এর সুরে মোহিত হয়ে উচ্ছ্বাসিত প্রশংসা করেছিলেন শ্রীমতি সরোজিনী নাইডু। হায়দ্রাবাদের নিজাম তাঁর গোল্ডেন জুবিলীর বিশেষ গানটি কমল দাশকে দিয়েই সুরারোপ করে রেকর্ড করিয়েছিলেন।

কমল দাশগুপ্তের শিল্পীজীবনের সোনালী অধ্যায় জুড়ে রয়েছে রূপালী পর্দা। তিনি ছায়াছবির অসংখ্য গানে সুরারোপ ও সংগীত পরিচালনা করেছেন। ১৯৩৬ সাল থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত তিনি ছায়াছবির কাজে ব্যস্ত ছিলেন। বাংলা, ইংরেজী, তামিল, হিন্দী প্রভৃতি ভাষার ছবিতে সংগীত পরিচালনা ও সুরারোপ করে তিনি বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করেন।

নিম্নে তাঁর সুরারোপিত ও সংগীত পরিচালিত ভারতীয় ছায়াছবিগুলির আংশিক তালিকা

পন্ডিত মশাই, গরমিল, শেষ উত্তর, জবাব, যোগাযোগ, হসপিটাল, চন্দ্রশেখর, নববিধান, ভাবীকাল, শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য, বিদেশিনী, প্রার্থনা, মন্দির, বঞ্চিতা, রাঙ্গামাটি, গিরিবালা, মেঘদূত, মধুমালতি, গোবিন্দ দা, বধুবরণ, প্যাহেচান, ইবান কি একরাত ও এ্যারাবিয়ান নাইটস। ‘কেন এমন হয়’ নামে বাংলাদেশের একটি ছায়া ছবিতে তিনি সংগীত পরিচালনা করেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কমল দাশগুপ্ত বৃটিশ ডানকান ব্রাদার্সের কিছু তথ্যমূলক চিত্রে সংগীত পরিচালনার সুযোগ লাভ করেন। শেষ উত্তর, যোগাযোগ, চন্দ্রশেখর ও শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য ছায়াছবিতে সঙ্গীত পরিচালনার কৃতিত্বের জন্যে তাঁকে চলচ্চিত্রের শ্রেষ্ঠ পুরস্কারে ভূষিত হয়।

সুরস্রষ্টা কমল দাশগুপ্তের জীবনে কবি নজরুল ইসলাম এক সুদীর্ঘ অধ্যায়। তাঁর বিশেষ কৃতিত্ব তিনি নজরুল সংগীতের বিশেষজ্ঞ ও সুরকার। ১৯৩৪ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ এগারটি বছর হিজ মাস্টারস্ ভয়েসে কবির সঙ্গে কাজ করেছেন। কবির সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় হিজ মাস্টারস্ ভয়েস অফিসে।

কমল দাশগুপ্ত দিনরাত কবির সঙ্গে কাটিয়ে নজরুল সঙ্গীত তথা বাংলা সাংস্কৃতির ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সূচনা করেছেন। তিনি নিজ প্রতিভাবলে কবির অত্যন্ত স্নেহভাজন হয়ে পড়েন। বিদ্রোহী কবি তাঁর বিশেষ গানগুলি তাঁকে সুরারোপের জন্যে দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্ত বোধ করতেন। কমল দাশের অনুরোধে কবি নজরুল ইসলাম উর্দু গজল ও কাওয়ালীর সুরে অনেক গান রচনা করেছেন। এমনকি কবি তাঁর জন্যে বেশ কিছু ইসলামিক গানও লিখেছিলেন।

এ সময় কমল দাশকে গ্রামোফোন কোম্পানীতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজী নজরুল ইসলাম ও ওস্তাদ জমির উদ্দীন খাঁর সঙ্গে সঙ্গীত বিষয়ে গবেষণা ও বিভিন্ন সুরারোপের কাজে নিয়োজিত থাকতে হতো। এই ব্যস্ততম সময়ে অধিকাংশ দিনই কবি নজরুল ইসলাম ও কমল দাশগুপ্ত দিনের বেলায় খাওয়ার সময়টুকুও পেতেন না। কবির একান্ত সঙ্গী হিসেবে কবির শিল্পীমনের বিচিত্র পরিচয় পেয়েছিলেন তিনি। তাই কবির রচিত প্রেম, ঋতু, ইসলামী, ভজন, কীর্তন, বাউল, ভাটিয়ালী প্রভৃতি চারশতের অধিক বিরল গানের সুরারোপ করার মত দূর্লভ কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন কমল দাশগুপ্ত। 

কমল দাশগুপ্তের মহত্ব

এক বিশাল হৃদয়ের অধিকারী ছিলেন কমল দাশগুপ্ত। অর্থের প্রতি কোন মোহই ছিল না তাঁর। তিনি ছিলেন একজন আদর্শ শিক্ষক, মহৎ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ও দুঃখীজনের বন্ধু। ১৯৪৩ সালে সারা ভারতবর্ষ যখন দুর্ভিক্ষের কবলে পতিত তখন কলকাতায় তুখা নাঙ্গা মানুষের পাশে এসে দাঁড়ালেন কমল দাশগুপ্ত। নিজ খরচে নঙ্গরখানা খুলে প্রতি দিন একশত করে লোক খাওয়াতেন তিনি। তাঁর এই মহৎ প্রচেষ্টা প্রায় মাসব্যাপী অব্যাহত ছিল।

স্বদেশ প্রীতির করুণ পরিণতি

এ দেশের সন্তান কমল দাশগুপ্ত এক বুকভরা প্রত্যাশা নিয়ে ১৯৬৭ সালে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্যে দেশের মাটিতে ফিরে আসেন। কিন্তু তাঁর সে প্রত্যাশা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) সংগীতের সীমিত জগৎ ও পরিবেশ তাঁর শিল্পী মনকে ব্যথিত করে তোলে। তিনি গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন এদেশের সংগীত জগৎকে; কিন্তু তদানীন্তন সরকারের সঙ্গীত পৃষ্ঠপোষকদের অবমূল্যায়ন ও অবহেলায় সঙ্গীত জগৎ-এর কোন অঙ্গনেই সামান্যতম স্থানটুকুও হয়নি তাঁর জন্যে।

নিদারুণ হতাশা ও দুঃখ দৈন্যর মধ্য দিয়েই এ সময়কার (ঢাকার) দিনগুলি অতিবাহিত হয়েছে কমল দাশগুপ্তের। জীবিকার অন্বেষণে অর্থের প্রয়োজনে ঢাকার হাতিরপুলে ‘পথিকার’ নামে একটি ছোট স্টেশনারী দোকান খুলেছিলেন তিনি।

জীবন সায়াহ্নে মৃত্যুর পূর্বে কমল দাশগুপ্তকে বাংলাদেশ বেতারের ট্রান্সক্রিপসন সার্ভিসের প্রধান সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। মৃত্যুপথযাত্রী কমল দাশগুপ্ত রেডিওতে এই স্বল্পকালীণ অবস্থান কালেই আব্দুল গফ্‌ফার চৌধুরী রচিত একুশের জনপ্রিয় সঙ্গীত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারী’ গানটির স্বরলিপি প্রণয়ন করেন। 

এছাড়াও তিনি বেশ কিছু হামদ, নাত, বাংলা কাওয়ালীসহ কবি নজরুল ইসলামের বিখ্যাত গান ‘শুকনো নূপুর পায়ে নাচিছে ঘূর্ণিবায়’ ও ‘পথহারা পাখি কেঁদে ফিরে একা’ গান দুটির সমবেত যন্ত্রসঙ্গীতের স্টুডিও রেকর্ডও প্রণয়ন করেন।

সম্মাননা

এই মহৎ শিল্পীর অবদান ও তাঁর প্রতিভার স্বীকৃতি স্বরূপ, ‘বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী’ তাঁকে জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত করেন।

মৃত্যু

সঙ্গীত জগতের এক বিস্ময়কর প্রতিভা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কমল দাশগুপ্ত। কিন্তু এদেশে অনাদরে অবহেলায় এই প্রতিভাধর পুরুষের জীবনে মৃত্যু ঘটে মৃত্যুর বহু পূর্বেই। চিরমৃত্যু হয় ১৯৭৪ সালের ২০ জুলাই ঢাকার পি, জি হাসপাতালে। ঢাকার আজিমপুর গোরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন