শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ , ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

শিশু সাহিত্যে এক ভিন্ন ধারা যুক্ত করেছিলেন লীলা মজুমদার

নিউজজি ডেস্ক ফেব্রুয়ারী ২৬, ২০২১, ০১:৪১:১৬

600
  • ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বাংলা সাহিত্যের অনন্য এক লেখিকা লীলা মজুমদার। তার প্রথম গল্প 'লক্ষ্মীছাড়া' প্রকাশিত হয় ১৯২২ সালে 'সন্দেশ' পত্রিকায়। পরবর্তীতে ১৯৬১ সালে সন্দেশ পত্রিকাটি সত্যজিৎ রায় পুনরায় চালু করলে সেখানে সাম্মানিক সহ-সম্পাদক হিসেবে ১৯৬৩-১৯৯৪ সাল পর্যন্ত যুক্ত থাকেন তিনি। দায়িত্ব পালন কালে ১৯৯৪ সালে এসে স্বাস্থ্যের অবস্থা ক্রমান্বয়ে খারাপ হওয়ায় দায়িত্ব থেকে অবসর নেন তিনি। 

মূলত বাংলার বিভিন্ন অঙ্গনে লীলা মজুমদারের অবাধ বিচরন থাকলেও ইংরেজী সাহিত্যের সাথেও তাঁর পরিচয়টা ছিল বেশ গভীর। তাঁর লেখা গদ্যে প্রভাব রয়েছে জ্যাঠামশাই উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর। শুধু তাই নয়, সুকুমার রায় শিশু সাহিত্যের পট পরিবর্তনের যে পথ দেখিয়ে গিয়েছেন, তিনি সে মাত্রাকে নিয়ে গেছেন অন্য এক চূড়ায়। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক।

হলদে পাখির পালক, টং লিং, পদি পিসীর বর্মী বাক্স, সব ভুতুড়ে, পাকদণ্ডী, নতুন ছেলে নটবর, আর কোনখানে, খেরোর খাতা, বদ্যিনাথের বাড়ি, দিনদুপুরে, কিশোরসাথী ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাবলী।

'পাকদণ্ডী' নামে তাঁর লেখা আত্মজীবনীতে তাঁর শিলঙে ছেলেবেলা, শান্তিনিকেতন ও অল ইন্ডিয়া রেডিওর সঙ্গে তাঁর কাজকর্ম, রায়চৌধুরী পরিবারের নানা মজার ঘটনাবলী ও বাংলা সাহিত্যের মালঞ্চে তাঁর দীর্ঘ পরিভ্রমণের কথা বর্ণিত হয়েছে। তাঁর প্রথম আত্মজীবনী 'আর কোনখানে'-এর জন্য ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্র পুরস্কার পান।

এছাড়াও তিনি অনেক শিক্ষামূলক রচনা ও রম্যরচনা ইংরেজী থেকে বাংলায় অনুবাদ করেছেন। সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য লীলা মজুমদার অর্জন করেছেন বেশ কিছু পুরস্কার আর সম্মাননা।

তাঁর অর্জিত পুরস্কার আর সম্মাননাগুলো হচ্ছে

আনন্দ পুরস্কার, ভারত সরকারের শিশু সাহিত্য পুরস্কার, সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার, রবীন্দ্র পুরস্কার, বিদ্যাসাগর পুরস্কার, ভুবনেশ্বরী পদক, ভুবনমোহিনী দাসী সুবর্ণ পদক, দেশিকোত্তম, ডি-লিট প্রমুখ।

জন্ম ও পারিবারিক জীবন

১৯০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তিনি রায় পরিবারের গড়পাড় রোডের বাড়িতে জন্ম নেন। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী (যাঁর পৈতৃক নাম ছিল কামদারঞ্জন রায়) ছিলেন প্রমদারঞ্জনের ভাই এবং লীলার কাকা। সেইসূত্রে লীলা হলেন সুকুমার রায়ের খুড়তুতো বোন এবং সত্যজিৎ রায়ের পিসি।

লীলার বাল্যজীবন কাটে শিলঙে। সেখানকার লরেটো কনভেন্টে তিনি পড়াশোনা করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি পরীক্ষায় তিনি সর্বোচ্চ নম্বর অর্জন করেন। তিনি অনেক বাংলা গল্প, প্রবন্ধ ও উপন্যাস রচনা করে অনেক পুরস্কার ও সম্মান লাভ করেন।

১৯৩৩ সালে লীলা বিয়ে করেন দন্ত চিকিৎসক ডাঃ সুধীর কুমার মজুমদারকে। এই বিবাহে তাঁর পিতার প্রবল বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও তিনি তার স্বনির্বাচিত পাত্রকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করেন। পিতৃ পরিবারের অন্যান্যের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট থাকলেও পিতার সঙ্গে সম্পর্ক চিরকালের মতো ছিন্ন হয়। বিবাহিত জীবনে লীলা-সুধীর খুব সুখী দম্পতি ছিলেন। স্বামী আজীবন লীলার সাহিত্যচর্চায় উৎসাহী ছিলেন। তাঁদের এক পুত্র ডাঃ রঞ্জন মজুমদার ও এক কন্যা কমলা চট্টোপাধ্যায়।

বাংলা সাহিত্য এবং আগামী প্রজন্মের শৈশবকে আরও অনেকটা দীন করে লীলা মজুমদার ২০০৭ সালের ৫ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন। সূত্র: ইন্টারনেট

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন