বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২ , ২৫ শাওয়াল ১৪৪৬

ফিচার
  >
ব্যক্তিত্ব

গোলাম মুস্তাফার জন্মদিন আজ

নিউজজি ডেস্ক ২ মার্চ , ২০২৫, ১৫:০০:২৭

117
  • ছবি: ইন্টারনেট

ঢাকা: অভিনয় এবং আবৃত্তি; সংস্কৃতির এই দুটি ভুবনে দ্যুতি ছড়িয়েছিলেন গোলাম মুস্তাফা। তার ভরাট কণ্ঠের সংলাপ কিংবা আবৃত্তি মানুষকে মুগ্ধ করতো। বিশেষ করে বাংলা চলচ্চিত্রে তার উপস্থিতি এবং অনবদ্য অভিনয়ের প্রেক্ষাপট এখনো সবার মনে আছে। চল্লিশ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি যুক্ত ছিলেন সিনেমার সঙ্গে।

আজ ২ মার্চ গোলাম মুস্তাফার জন্মদিন। ১৯৩৪ সালের এই দিনে বরিশালের দপদপিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বিশেষ এই দিনে তার প্রতি শ্রদ্ধা।

গোলাম মুস্তাফা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন বহুমাতৃক অভিনেতা হিসেবে। মূলত প্রথম ছবি থেকেই তিনি খলনায়ক চরিত্রের একক ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। সিনেমা ও নাটক উভয় ক্ষেত্রেই তিনি পারদর্শিতা প্রদর্শন করেন।

গোলাম মুস্তাফা ঢাকায় আসেন পঞ্চাশের দশকের মধ্য সময়ে। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি দেশের একজন খ্যাতিমান আবৃত্তিকারও ছিলেন গোলাম মুস্তাফা। তাঁর দরাজ কণ্ঠস্বর অসংখ্য কবিতাকে প্রাণ দিয়েছিল নতুন মাত্রায়। চলচ্চিত্রের ন্যায় আবৃত্তিশিল্পেও তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। স্বাধীনতা পরবর্তী আবৃত্তিশিল্পটি গণমানুষের কাছে জনপ্রিয় করতে গোলাম মুস্তাফার ভূমিকা অনন্য।

১৯৪৫ সালে বরিশাল অশ্বিনী কুমার টাউন হল মঞ্চে বি.ডি হাবিবুল্লাহ রচিত পল্লীমঙ্গল নাটকে তিনি প্রথম অভিনয় করেন। এটাই তার অভিনিত প্রথম মঞ্চ নাটক। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকে নাটকে অভিনয় করেন।

প্রথমদিকে ১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৬৯ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি নাটকে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন গোলাম মুস্তাফা। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হচ্ছে- গুপ্তধন, অর্পিতা, হিতঙ্কর, পাথরে ফুটাবো ফুল, যুবরাজ, অস্তরাগে।

গোলাম মুস্তাফা প্রায় দুই শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তার উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হচ্ছে—রাজধানীর বুকে , হারানো দিন , চাকা, নাচঘর, কাজল, বন্ধন, ফির মিলেঙ্গে হাম দোনো, বেগানা, চাওয়া পাওয়া, দাসী, দুই রাজকুমার, বলাকা মন, হিসাব নিকাশ, শুভদা, এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী, পীরিত না জানে রীত, চোখাই, তালাশ, আলিবাবার চল্লিশ চোর, নিজেকে হারায়ে খুঁজি, রক্তাক্ত বাংলা, তিতাস একটি নদীর নাম, সূর্যসংগ্রাম, দোষী, স্লোগান, অন্যায় অবিচার, ব্যথার দান, সুরুজ মিয়া, সীমানা পেরিয়ে, সারেং বউ, পদ্মা নদীর মাঝি, চন্দ্রনাথ, দেবদাস, আশা ভালোবাসা, লাল বেনারশি, জীবন সংসার, দীপু নাম্বার টু, শ্রাবণ মেঘের দিন।

গোলাম মুস্তাফার মেয়ে সুবর্ণা মুস্তাফা বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী এবং সংসদ সদস্য। জামাতা হুমায়ুন ফরীদিও ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা।

১৯৮০ সালে ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য গোলাম মুস্তাফা সেরা পার্শ্বচরিত্র অভিনেতা এবং ১৯৮৬ সালে ‘শুভদা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। চলচ্চিত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০০১ সালে একুশে পদক সম্মানে ভুষিত হন।

২০০৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন গোলাম মুস্তাফা। তবে চলে গেলেও গুণী এই ব্যক্তিত্বকে এখনো মনে রেখেছেন দর্শকরা। ঢালিউডের ইতিহাসে তিনি থেকে যাবেন একটি সম্মানজনক স্থানে।

নিউজজি/পিএম/নাসি 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন