শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ , ২৭ শাওয়াল ১৪৪৬

ফিচার
  >
বিশেষ দিবস

ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস আজ

নিউজজি ডেস্ক ২৮ ফেব্রুয়ারি , ২০২৫, ১৫:০৮:৫২

126
  • ছবি: ইন্টারনেট

ঢাকা: ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস আজ। দেশে চলমান পরিস্থিতিতে আজ শুক্রবার পালিত হচ্ছে দিবসটি। প্রতিবছর ২৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘ডায়াবেটিস : ঝুঁকি জানুন, শনাক্ত করুন, পদক্ষেপ নিন’।

দেশে কত মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তা নিয়ে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। কারণ ডায়াবেটিস আছে, এমন অর্ধেকেরও বেশি মানুষ জানেই না যে তাদের ডায়াবেটিস আছে। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের (আইডিএফ) তথ্য অনুযায়ী, দেশে এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এর প্রায় অর্ধেক প্রাপ্তবয়স্ক নারী।

দেশের হরমোন বিশেষজ্ঞদের দাবি, দেশে ডায়াবেটিস রোগীর ২-৩ শতাংশের বয়স ১৬ বছরের কম। সংখ্যার হিসাবে এটি প্রায় চার লাখ। এদের বেশির ভাগই টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

হরমোন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, শিশু-কিশোরদের মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের হার ভয়াবহ আকারে বাড়ছে।

বিশ্বে কম বয়সীদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের হার সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে। অথচ তাদের হওয়ার কথা টাইপ-১ ডায়াবেটিস। বিশ্বের অন্যান্য দেশে তা-ই আছে।

তিনি বলেন, শিশু-কিশোরদের ডায়াবেটিসে আক্রান্তের প্রধান কারণ তিনটি। এক. বংশগত, দুই. গর্ভাবস্থায় মায়ের ডায়াবেটিস থাকা এবং তিন. কম বয়সে ওজন বেড়ে যাওয়া।

আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর প্রায় অর্ধেকই নারী। এর মধ্যে প্রতি ১০০ জনে ২৬ জন নারী গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন, যাঁদের ৬৫ শতাংশ পরবর্তী সময়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীদের ও গর্ভস্থ শিশুদের টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি ড. এ কে আজাদ খান বলেন, ‘ডায়াবেটিস প্রধানত টাইপ-১ ও টাইপ-২ এই দুইভাবে আমরা ভাগ করি। আমাদের দেশে ৯৫ শতাংশ রোগী টাইপ-২ ধরনের। টাইপ-১ হচ্ছে যাদের শরীরে একেবারেই ইনসুলিন তৈরি হয় না। তাদের ইনসুলিন বা পুরোপুরি ওষুধের ওপর নির্ভর করতে হয়। সে জন্য সব সময় চিকিৎসকের পরামর্শে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তবে টাইপ-২ ধরনের ক্ষেত্রে আগাম সতর্কতা অবলম্বন করলে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস ঠেকিয়ে রাখা বা বিলম্বিত করা সম্ভব।’

চিকিৎসকরা জানান, টাইপ-২ ডায়াবেটিস একটু বেশি বয়সের শিশু বা কিশোর-কিশোরীদের দেখা যায়। যাদের ওজন বেশি, শরীরে অতিমাত্রায় মেদ, কায়িক পরিশ্রম করে না, তাদের এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তবে উভয় ক্ষেত্রেই কিছু জিনগত বৈশিষ্ট্য এ রোগ হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া বিভিন্ন হরমোনের অসামঞ্জস্যতা বা কিছু ওষুধের কারণেও ডায়াবেটিস হতে পারে। মেদবহুল, স্থূল শিশু, ঘাড়ের ত্বকে কালো দাগ, কিশোরীদের পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম থাকলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস থাকতে পারে।

বারডেমের এন্ডোক্রোইনোলজি বিভাগের অধ্যাপক মো. ফারুক পাঠান বলেন, ২০ বছর আগে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়া মানুষের গড় বয়স ছিল ৫০ বছর। এখন তা ৩৫ বছরে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার ৭ এবং ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সে তা ৪ শতাংশ। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের প্রতি ঝোঁক শিশুদের দৈহিক, মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। এ কারণে শিশুদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেশি বলে ধারণা করা হয়।

নিউজজি/পিএম

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন