শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ , ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার
  >
বিশেষ দিবস

আন্তর্জাতিক ধাত্রী দিবস আজ

নিউজজি ডেস্ক ৫ মে , ২০২১, ১২:৩০:০৯

3K
  • সংগৃহীত

ঢাকা:  ৫ মে, আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ বা ধাত্রী দিবস আজ। একজন মিডওয়াইফ বা ধাত্রী গর্ভাবস্থায়, প্রসব বেদনা এবং প্রসবের প্রারম্ভিক অবস্থায় নারী এবং শিশুদের পরামর্শ, যত্ন এবং সহায়তা প্রদান করেন। তিনি গর্ভাবস্থার সময়ে নারীদেরকে তাদের তত্ত্বাবধানে রেখে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেন এবং স্বাস্থ্য ও শিশুর পরিচর্যা বিষয়ক উপদেশ প্রদান করেন।

একজন মিডওয়াইফ মা এবং সন্তান উভয়ের স্বাস্থ্যের জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ এবং গর্ভাবস্থা বা জন্মকালীন মেডিকেল জটিলতা দেখা দিলে গাইনি ডাক্তার দেখানোর জন্য পরামর্শ দেন। একজন মিডওয়াইফ হাসপাতাল এবং কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা দিয়ে থাকেন।

মিডওয়াইফ সেবা বিশ্বের অন্যতম মানবিক পেশা। তারা যুগ যুগ ধরে সন্তান প্রসবে সেবা প্রদান করে আসছেন। বলা হয়, মিডওয়াইফ হলেন এমন একজন দক্ষ ও শিক্ষিত সেবিকা, যিনি মা ও শিশুকে নিবিড়ভাবে সেবা দেবেন। যদি কখনো কোনো ধরনের জটিলতা হয়, সেটা বুঝতে পারবেন তাহলে প্রাথমিক সেবা প্রদান করে সঠিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠিয়ে দেবেন। ১৯৯২ সালে তাদের এই কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ৫ মে তারিখটি আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস ঘোষিত হয়।

দিবসটির স্বীকৃতি পেতে ১৯৮০ সাল থেকে দাবি তোলা হয়। সর্বশেষ স্বীকৃতি মিলে ১৯৯২ সালে। এরপর প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে নানা আনুষ্ঠানিকতায় দিবসটি পালিত হয়। ইন্টারন্যাশনাল কনফেডারেশন অব মিডওয়াইফ (আইসিএম) এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছেন 'তথ্য উপাত্ত অনুসরণ করুন: মিডওয়াইফারি খাতে বিনিয়োগ করুন।'

অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে পালন করা হয়। তবে এ বছর মহামারির  প্রাদুর্ভাবের ফলে অনেকটা সীমিত পরিসরে দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে। মিডওয়াইফগণ মা ও নবজাতকের সেবায় নেতৃত্ব দানের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। গুণগত সেবা নিশ্চিত করেন। মা ও শিশু মৃত্যুহার কমাতে ভূমিকা রাখেন। বয়ঃসন্ধিকালের কিশোরীদের পরামর্শ দেন। এছাড়াও নারীর প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিয়ে রোধেও কাজ করছেন তারা। স্বাস্থ্যসেবা খাত সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এই বছরের প্রতিপাদ্যের মাধ্যমে মিডওয়াইফরা এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখবেন।

নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০১০ সালে জাতিসংঘের ৬৫তম সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মিডওয়াইফারি সেবা এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতি দেন। তার সেই প্রতিশ্রুতির আলোকে সারা দেশের গর্ভবতী মা ও নবজাতকের মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে ৪২১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও এক হাজার ৩১২টি ইউনিয়ন সাব সেন্টারে তিন হাজার মিডওয়াইফ পদ সৃষ্টি করা হয়। ৩৪২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ২৯টি ইউনিয়ন সাব সেন্টারে এক হাজার ১৪৯ জন রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত প্রশিক্ষিত মিডওয়াইফ নিয়োগ প্রদান করা হয়। পিএসসির আওতায় আরও এক হাজার ৮৫০ জন মিডওয়াইফ নিয়োগের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

২০১৩ সালে দেশে প্রথম ২০টি নার্সিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫২৫ আসনে তিন বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্স চালু করা হয়। বর্তমানে সেখানে সরকারি ৪১টি সরকারি নার্সিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক হাজার ৫০টি আসন বর্ধিত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বেসরকারি আরও ৪১টি প্রতিষ্ঠানে এক হাজার ৮০টি আসনে ভর্তি কার্যক্রম চলছে। সারা দেশে চার হাজার ৪০০ জন রেজিস্ট্রার মিডওয়াইফ রয়েছে। মিডওয়াইফদের শিক্ষা ও সেবার মানোন্নয়নের লক্ষে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। 

প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে একই কারিকুলামে একই পাঠদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন করা হয়েছে। উচ্চতর ডিগ্রির জন্য বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের উদ্যোগে বিএসসি ইন মিডওয়াইফারি কারিকুলাম অনুমোদিত হয়েছে। চলতি বছর থেকে কার্যক্রম শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে এমএসসি ইন মিডওয়াইফারি কারিকুলাম প্রণয়নের কাজ অব্যাহত রয়েছে। দক্ষ শিক্ষক তৈরিতেও দেয়া হচ্ছে জোর। এরইমধ্যে সুইডেনের ডালার্না বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১২০ জন মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। আরো ৩০ জন অধ্যয়নরত রয়েছেন।

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন