নিউজজি ডেস্ক ৪ মার্চ , ২০২১, ২০:৪০:৩৮
ছবি: ইন্টারনেট
ঢাকা: করোনা মহামারি থেকে সুরক্ষায় বিদ্যমান লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়েছে জার্মানি। আগামী ২৮ মার্চ পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। তবে বেশকিছু বিধিনিষেধে ছাড় দেয়া হয়।
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল জানান, পাঁচটি পদক্ষেপের মাধ্যমে ধীরে ধীরে লকডাউন তোলার ব্যবস্থা করা হবে। তবে এটি তুলতে গিয়ে যদি সংক্রমণ বেড়ে যায় তাহলে ফের সেই অঞ্চলে কড়া লকডাউন ফিরিয়ে আনা হবে। এছাড়া, টিকাদান কর্মসূচিতেও গতি আনা হবে।
মঙ্গলবারই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, জার্মানিতে আরো তিন সপ্তাহের জন্য লকডাউন বাড়ানো হবে। তবে সেদিন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। বুধবার দেশের ১৬টি রাজ্যের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন ম্যার্কেল। প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে বৈঠক চলে। সেখানেই লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে পাঁচটি পদক্ষেপের মাধ্যমে লকডাউন তোলার ব্যাপারেও আলোচনা হয়।
৯ ঘণ্টা বৈঠকের পর ম্যার্কেল বলেন, জাতীয় ও রাজ্য স্তরে পাঁচটি পদক্ষেপের মাধ্যমে লকডাউন শিথিল করা হবে। সংক্রমণ কমলে প্রতি ১৪ দিনে এই পদক্ষেপগুলো নেয়া হবে। লকডাউন শিথিলের পর টানা তিন দিন যদি সংক্রমণ ১০০-এর বেশি হয় তাহলে ফের কড়া লকডাউন ফিরিয়ে আনা হবে। আগামী ৮ মার্চ থেকে জার্মানির সব নাগরিক সপ্তাহে একবার বিনামূল্যে রাপিড টেস্ট করাতে পারবেন।
এখন পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সবাইকে দেয়া হচ্ছে না। ৬৫ বছরের নিচে যাদের বয়স তারাই এই ভ্যাকসিন পাচ্ছেন। একটি স্বাধীন কমিটি তৈরি করা হয়েছে। এই নিয়ম বদলানো যায় কি না, তা খতিয়ে দেখবে তারা। তাদের গ্রিন সিগন্যাল মিললে সবাইকেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দেয়া হবে।
পাঁচটি পদক্ষেপ
স্কুল ও ডে কেয়ারগুলো খুলে দেয়া হচ্ছে। হেয়ার ড্রেসাররাও কাজ শুরু করে দিতে পারবেন। গত ১ মার্চ থেকেই এই নিয়ম চালু হয়ে গেছে।
আগামী ৮ মার্চ থেকে বই ও ফুলের দোকান খোলা যাবে। তবে ১০ বর্গমিটারের ব্যবধানে ক্রেতাদের থাকতে হবে। কঠোরভাবে এই নিয়ম পালন করতে হবে। ম্যাসাজ পার্লারও খুলে দেয়া হবে ৮ মার্চ থেকে। তবে ম্যাসিওরকে করোনার পরীক্ষা করাতে হবে। নেগেটিভ রিপোর্ট থাকলে তবেই তিনি কাজ শুরু করতে পারবেন।
সংক্রমণ প্রতি এক লাখে ৫০ এর মধ্যে থাকলে ৮ মার্চ থেকে জাদুঘর, চিড়িয়াখানার মতো জায়গাগুলো খুলে দেয়া হবে। খোলা হবে রিটেইল স্টোরও। কিন্তু ১০ বর্গমিটারের ব্যবধান মানতে হবে। ১০ জন পর্যন্ত বাইরে খেলাধূলা করতে পারবেন। এই নিয়ম চালু হওয়ার পর যদি সংক্রমণ বাড়তে থাকে তখন প্রতিটি নিয়মই বদলে ফেলা হবে। জাদুঘর, চিড়িয়াখানায় প্রি বুকিং করে ঢোকা যাবে। অন্তত ৪০ বর্গমিটারের ব্যবধান মানতে হবে। পাঁচজন একসঙ্গে বাইরে খেলতে পারবেন।
আগামী ২২ মার্চ থেকে চতুর্থ পদক্ষেপ নেয়া হবে। সংক্রমণ ৫০ এর নিচে থাকলে থিয়েটার, আউটডোর রেস্তোরাঁ, অপেরা হাউসের মতো স্থানগুলো খুলে দেয়া হবে। কনট্যাক্টলেস ইনডোর এবং আউটডোর খেলায় কোনো বিধিনিষেধ থাকবে না। কিন্তু সংক্রমণ বেড়ে ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সবকিছুই প্রি বুকিংয়ের মাধ্যমে করতে হবে।
৫ এপ্রিল থেকে পঞ্চম পদক্ষেপ নেয়া হবে। সংক্রমণ ৫০ এর নিচে থাকলে ৫০ জন এক জায়গায় জড়ো হতে পারবেন। খেলাধূলার ওপর থেকে যাবতীয় বিধিনিষেধ তুলে নেয়া হবে। সংক্রমণ ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে দোকানপাট খোলা যাবে। তবে ১০ বর্গমিটারের দূরত্ব মানতে হবে।
একইসঙ্গে টিকাদানের ক্ষেত্রেও গতি আনা হচ্ছে। বাড়ানো হচ্ছে টেস্টের সংখ্যা। দিনে দুই লাখ টেস্ট যাতে হয় তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মার্চের শেষ এবং এপ্রিলের প্রথম দিকে জার্মানির সব চিকিৎসক যাতে টিকা নিতে পারেন তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন যাতে সবাই নিতে পারেন সেই চেষ্টাও করা হচ্ছে। সূত্র: ডিডব্লিউ
নিউজজি/আইএইচ