শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ , ৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

খেলা
  >
ক্রিকেট

বাজে বোলিং-ফিল্ডিংয়েই অজিদের কাছে হারল পাকিস্তান

ক্রীড়া ডেস্ক ২০ অক্টোবর , ২০২৩, ২৩:১৩:৫৯

300
  • ছবি: ক্রিকইনফো

বেঙ্গালুরুর রানপ্রসবা এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আগে বোলিং করলে সুবিধা। এ আশায় শুক্রবার টস জিতে পাকিস্তান নেমেছিল ফিল্ডিংয়ে। কিন্তু তাদের ধারনা ভুল প্রমান করেন ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ। ২৫৯ রানের জুটি গড়েন তারা। এজন্য পাকিস্তানি ফিল্ডারের দারুন অবদান রয়েছে। একাধিকবার ওয়ার্নারের ক্যাচ ফেলেন তারা। এ সুযোগে উভয় ব্যাটার করেন  সেঞ্চুরি। পরেে আরও বিধ্বংসী হন ওয়ার্নার। যে কারনে অজিরা পায় পাহাড়সম পুঁজি।  লক্ষ্য  তারার শুরুটা দারুণ করে পাকিস্তানের দুই ওপেনার ইমাম উল হক ও আবদুল্লাহ শফিক। ১৩২ রানে তাদের  জুটি ভাঙলে পথ হারায় পাকিস্তান। রিজওযান চেষ্টা করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত পারননি তিনি। যে কারনে ৬২ রানের হার মানতে হয়েছে পাকদের।

শুক্রবার টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে  ৫০ ওভারে অস্ট্রেলিয়া তুলে ৯ উইকেটে ৩৬৭ রান। ওয়ার্নার ১২৪ বলে ১৪ চার ও ৯ ছয়ে করেন ১৬৩ রান। মার্শের ব্যাট থেকে আসে ১০৮ বলে ১০ চার ও ৯ ছয়ে ১২১ রান। পাকিস্তানের হয়ে  শাহিন আফ্রিদি ৫৪ রানে নেন ৫ উইকেট। এদিকে হারিস রওফ নেন ৮৩ রানে নেন ৩ উইকেট। জবাব দিতে নেমে ইমাম-শফিকের ব্যাটে দারুণ শুরু পায় পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত দলটি গুটিয়ে যায় ৪৫.৩ ওভারে ৩০৫ রানে। ইমাম ৭০, শফিক করেন ৬৪ রান। অজি স্পিনার জাম্পা নেন ৫৩ রানে ৪ উইকেট।

৩৬৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে যেমন শুরু দরকার ছিল ঠিক তেমনটাই করেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক ও ইমাম-উল-হক। শুরু থেকেই দেখে শুনে খেলতে থাকেন। রান তোলার দিকেও চোখ রাখেন। এ কৌশলে রানের চাকা সচল রেখে ছুটতে থাকেন। এ পথ চলতে তাদের জুটি ৫০ বলে ৫০ রান করেন। এরপর এ জুটি ১০০ বলে করে ১০০ রানও। শেষ পর্যন্ত ২১. ১ ওভারে ১৩৪ রানে তাদের জুটি বিচ্ছিন্ন হয়। স্টয়নিসের বলে শফিক ক্যাচ তুলে দেন। সহজ ক্যাচ নিয়ে কোন সমস্যায় হয়নি ম্যাক্সওয়েলের। ফেরার আগে শফিক করেন ৬১ বলে ৭ চার ও ২ ছয়ে ৭০ রান। 

শফিক ফিরলেও বাবর আজমকে নিয়ে বেশ খেলছিলেন ইমাম। তবে তাদের জুটি বেশিদূর এগোতে দেননি সেই স্টয়নিস। ২৪তম ওভারের চতুর্থ বলে ইমামকে ফেরান তিনি। এ পেসারের শর্ট বল তুলে মারতে গিয়েছিলেন ইমাম। কিন্তু ডিপ থার্ড ম্যানে দাঁড়ানো স্টার্কের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ফেরার আগে ইমামের ব্যাট থেকে আসে ৭০ রান। এজন্য তিনি খেলেন ৭১ বল। তার ইনিংসটি সাজানো ১০ চারে। 

ইমাম ফেরার পরেই চাপে পড়ে পাকিস্তান। যে কারণে অধিনায়ক বাবর আজম একটু চড়াও হতে চেয়েছিলেন বোলারদের ওপর। কিন্তু এর খেশারতটা তিনি দেন দ্রুতই। অ্যাডাম জাম্পার এক নিরীহ বল পুল করতে যেয়েই ধরা পড়েন কামিন্সের হাতে। ফেরার আগে ১৪ বলে ৩ চারে ১৮ রান করেন বাবর। 

রিজওয়ান চেষ্টা করেছিলেন। তাকে সাদ সাকিল ও ইফতিখার সঙ্গ দিয়েছিলেন বেশ। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেননি তারা। তাই চাপ বাড়ে রিজওয়ানের উপর। যা সামলাতে পারেননি তিনি। ইনিংসের ৪১তম ওভারে জাম্পার বলে ৪৬ রান করেন ফেরেন রিজু। এরপর শুধু পরাজয়ের ব্যবধান কমায় পাকিস্তান।

এরআগে বেঙ্গালুরুতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ঝড় তুলেন অস্ট্রেলিয়ার দুই উদ্বোধনী ব্যাটার ওয়ার্নার ও মার্শ। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী জুটিতে হয়েছে আরেকটি রেকর্ড। তারা তোলেন ২৫৯ রান। যা বিশ্বকাপে দলটির ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। এর আগে ২০১১ বিশ্বকাপে কানাডার বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে ১৮৩ রান ছিল এতদিন সেরা।

ইনিংসের পঞ্চম ওভারে ডেভিড ওয়ার্নারের সহজ ক্যাচ ফেলে দেন  পাকিস্তানের একাদশে জায়গা পাওয়া লেগ স্পিনার উসামা মীর। কুড়িয়ে পাওয়া সুযোগ নিয়ে ঝড় তুলেছেন ওয়ার্নার। ৭ চার ও ৬ ছক্কায় ৮৫ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। সেই ইনিংস তিনি টেনে নেন ১৬৩ রান পর্যন্ত। তাকে শেষ পর্যন্ত সাজঘরে ফেরান হারিস রওফ। 

ওয়ার্নারকে শুক্রবার যোগ্য সঙ্গ দিয়ে শতক হাঁকান মিচেল মার্শ। ৩১ তম ওভারের পঞ্চম বলে চার মেরে তিন অঙ্কে পৌঁছান মার্শ। ১০ চার ও ৬ ছক্কায় বরাবর ১০০ বলে সেঞ্চুরি করেন এই ওপেনার।

মার্শের সেঞ্চুরিতেও হয়েছে রেকর্ড। আজ অস্ট্রেলিয়ান এই ওপেনারের জন্মদিন। বিশ্বকাপে জন্মদিনে দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। এর আগে নিউ জিল্যান্ডের রস টেইলর এই কীর্তি গড়েছিলেন। ২০১১ বিশ্বকাপে এই পাকিস্তানের বিপক্ষেই ১৩১ রানের অনবদ্য খেলেছিলেন কিউই ব্যাটার। 

সেঞ্চুরির পর ঝড় তোলার চেষ্টা করেন মার্শ। তবে সেটা বেশিক্ষণ করতে পারেননি তিনি। তাকে ইনিংসের ৩৪তম ওভারের ৫ম বলে থামান আফ্রিদি। হুট করেই পাকিস্তান পেয়ে যায় দ্বিতীয় উইকেটটিও, সেটিও মার্শ ফেরার ঠিক পরের বলেই। তুলে মারতে গিয়ে বাবর আজমের হাতে ধরা পড়ে ‘গোল্ডেন ডাক’ গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের। দ্রুত সময়ের মধ্যে ফিরতে পারতেন স্টিভ স্মিথ। তবে মীরের বলে স্লিপে ক্যাচ মিস করে বসেন অধিনায়ক বাবর। তবে বেশিদূর এগোতে পারেননি স্মিথ। যদিও তিনি ফেরেন মীরের হাতেই ফিরতি ক্যাচ দিয়ে। অবশ্য ওয়ার্নার ছিলেন, তার সঙ্গে যোগ দেওয়া মার্কাস স্টয়নিস অস্ট্রেলিয়াকে ৪০০-এর পথেই রাখার আভাসও দেন। তবে  প্রথম ৪ ওভারে ৫৯ রান দেওয়া রওফ এসে থামান ওয়ার্নারকে। পরের ওভারে জশ ইংলিসও তার শিকার। আফ্রিদির বলে মার্কাস স্টয়নিস থামার পরই অস্ট্রেলিয়ার শেষের ঝড়ের আশা কার্যত শেষ হয়ে যায়। শেষ ওভার করতে এসে মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজলউডকে ফিরিয়ে ইনিংসে দ্বিতীয়বার হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে যান আফ্রিদি। যদিও তিনি হ্যাটট্রিক করতে পারেননি। তবে ঠিকই অজিদের শেষ দিকে ঝড় তোলাটা থামান। যে কারণে অজিরা থামে ৩৬৭ রানে।

ব্যাট হাতে অসধারণ ইনিংস খেলায় ম্যাচসেরা হয়েছেন ওয়ার্নার।

নিউজজি/সিআর

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন