মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১ , ২১ রজব ১৪৪৬

খেলা
  >
ক্রিকেট

টানে হারে ১০ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ওয়ানডে সিরিজ হাতছাড়া বাংলাদেশের

ক্রীড়া ডেস্ক ১১ ডিসেম্বর , ২০২৪, ০৯:৩৮:৪৪

296
  • ছবি: ক্রিকইনফো

টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পরও তানজিদ তামিম দারুণ ব্যাট করেন। মাঝে আফিফ হোসেন, জাকের আলীরা নিজেদের ধরে পারেননি। তবে মাহমদউল্লাহ রিয়াদ আর তানজিদ হাসান সাকিব দলের হাল ধরেন। তাদের ব্যাটে দুইশ রান পার করে বাংলাদেশ। যদিও স্কোর বোর্ড লড়াই করার মতো পুঁজি দাঁড় করতে পারেনি বাংলাদেশ। এদিকে বল হাতে শুরু থেকেই হতাশা উপদায় দেয় দলটি। এরমধ্যে ক্যাচ মিসও হয়। সে সুযোগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী জুটিতে ব্রান্ডন কিং আর এভিন লুইস ম্যাচ থেকে বাংলাদেশকে ছিটকে দেন। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে হেরে এক ম্যাচ আগেই ১০ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ওয়ানডে সিরিজ হাতছাড়া করল টিম টাইগার্স।

মঙ্গলবার সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছে ৭ উইকেট। এদিন টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ৪৫.৫ ওভারে তোলে ২২৭ রান। মাহমুদউল্লাহ ৬২, তানজিদ ৪৬, তানজিম ৪৫, আফিফ ২৬ রান করেন। জবাব দিতে নেমে ৩৬.৫ ওভারে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ক্যারিবীয়রা। দলটির হয়ে কিং ৮২, লুইস ৪৯, ও কার্টি করেন ৪৫ রান। এরফলে ৩ ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে নিজেদের করে নিলো স্বাগতিকরা। 

সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অপূর্ণতা থাকলে থাকবে কিংসের সেঞ্চুরি না পাওয়া আর কিংসের হাফসেঞ্চুরি বঞ্চিত হওয়া। এরআগে জেইডেন সিলসের আগুনে পোড়ে টাইগাররা। টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ পাওয়ার প্লের মধ্যেই হারিয়ে ফেলে তিন ব্যাটসম্যানকে। সৌম্য ফেরেন গা-ছাড়া ভাবে ইন-সাইড আউট করতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে (৫ বলে ২), রান নিতে হিমশিম খাওয়া লিটন অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল টেনে পুল খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে (১৯ বলে ৪) আর মিরাজ বল ছাড়বেন কি খেলবেন দ্বিধায় শেষ মুহূর্তে ছাড়তে গিয়ে ব্যাট দিয়ে বল স্টাম্পে টেনে এনে বোল্ড হয়ে (৫ বলে ১)। তবে ওপেনার তানজিদ তামিম একপ্রান্তে ছিলেন আক্রমণাত্মক ভূমিকায়।

ভালো খেলতে থাকা তানজিদও উইকেটের মিছিলে যোগ দেন ১১তম ওভারেই, বাংলাদেশ চতুর্থ উইকেট হারায় ৬৪ রানে। এক পর্যায়ে আফিফ, জাকের, রিশাদদের বিদায়ে বাংলাদেশের স্কোর পরিণত হয় ৭ উইকেটে ১১৫ রানে। সেখান থেকে অষ্টম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ ও তানজিম সাকিবের ৯২ রানের জুটির সৌজন্যে। ৪৪তম ওভারে তানজিম তাঁর ক্যারিয়ারসেরা ৪৫ রান করে আউট হওয়ার পরের ওভারেই মাহমুদউল্লাহ ফেরেন ৬২ করে। এ দুজন বড় জুটি গড়লেও টপ ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় বাংলাদেশের ইনিংস থেমেছে ৪৫.৫ ওভারে ২২৭ রানেই, যা শেষ পযন্ত বড় হারই এনে দিয়েছে। সেই সঙ্গে এক দশক পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে সিরিজ হারও।

রান তাড়ায় নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয়ের ভিত্তিটা পেয়ে যায় কিং-লুইসের উদ্বোধনী জুটিতেই। তাদের জুটিতেই আসে ১০৯ রান। একুশতম ওভারের প্রথম বলে লুইস ৪৯ রান করে রিশাদের বলে তাঁরই হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। এরপর কিসি কার্টিকে নিয়ে আরেকটি বড় জুটি গড়েন কিং। দ্রুত রান তুলে সেঞ্চুরির দিকেও এগিয়ে যান। তবে নাহিদ রানার দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হলে ডানহাতি এ ব্যাটসম্যানকে ৮২ রান নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। কার্টির সঙ্গে জুটিতে ৪৮ বলে ৬৬ রান যোগ করে যান কিং। কার্টিও অবশ্য এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি, বাংলাদেশের ছয় নম্বর বোলার হিসেবে আসা আফিফ হোসেনের বলে ফেরেন ৪৫ রান করে। তবে জয়ের জন্য দরকারি রান ততক্ষণে ৩০-এর নিচে নেমে আসায় শাপ হোপ-শারফেন রাদারফোর্ড লক্ষ্যপূরণ করেছেন সহজেই।

বাংলাদেশ ম্যাচটা হেরে গেছে মূলত ব্যাটিংয়েই। প্রথম ওয়ানডেতে ২৯৪ রানের পুঁজি নিয়েও ৫ উইকেটে হারতে হয়েছিল। এবার সেটা আড়াই শতেও পৌঁছানো যায়নি। তাই খেশারতটা হেরেই দিতে হয়েছে টাইগারদের।

সিরিজের শেষ ওয়ানডে ১২ ডিসেম্বর একই মাঠে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ৪৫.৫ ওভারে ২২৭ (মাহমুদউল্লাহ ৬২, তানজিদ ৪৬, তানজিম ৪৫, আফিফ ২৬, শরীফুল ১৫; সিলস ৪/২২, মোতি ২/৩৬, চেজ ১/১৮)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩৬.৫ ওভারে ২৩০/৩ (কিং ৮২, লুইস ৪৯, কার্টি ৪৫, রাদারফোর্ড ২৪*; আফিফ ১/১২, রানা ১/৩৮)। 

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে জয়ী। 

ম্যাচ সেরা: জেইডেন সিলস। 

সিরিজ: ৩ ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে।

নিউজজি/সিআর

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন