শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ , ২০ শাওয়াল ১৪৪৬

খেলা
  >
ক্রিকেট

উইলিয়ামসন-রাচিনে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ে ফাইনালে নিউ জিল্যান্ড

ক্রীড়া ডেস্ক ৫ মার্চ , ২০২৫, ২৩:৩২:১৩

123
  • ছবি: ক্রিকইনফো

আইসিসি টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে নিলেই যেন সেঞ্চুরি করবেন রাচিন রবীন্দ্র। ব্যাপারটি যেন অভ্যাসে পরিণত করেছেন তিনি। চলতি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা নিউ জিল্যান্ড ওপেনার এবার আলো ছড়ালেন সেমিফাইনালের মঞ্চে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নান্দনিক ব্যাটিংয়ে উপহার দিলেন আরেকটি সেঞ্চুরি। এদিকে দারুণ পারফর্ম করে কেন উইলিয়ামসনও পেলেন তিন অঙ্কের দেখা। দুজনের সেঞ্চুরির সুবাদে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে এক আসরে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ে নিউ জিল্যান্ড। এমন দিনে প্রোটিয়াদের হারিয়ে এ টুর্নামেন্টের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে কিউইরা।

বুধবার লাহোরে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫০ রানে হারিয়েছে নিউ জিল্যান্ড। এদিন টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে রাচিন রবীন্দ্র (১০৮), কেন উইলিয়ামসনের (১০২) সেঞ্চুরির সুবাদে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে এক আসরে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ে নিউ জিল্যান্ড। যে রেকর্ডের পথ ধরে কিউইরা ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৬২ রান তুলে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে কোনো দলের সর্বোচ্চ সংগ্রহ এটি। জবাব দিতে নেমে ডেভিভ মিলার ঝড়ে (৬৭ বলে ১০০) ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩১২ রানে থেমে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বুধবার ব্যাট করতে নেমে উইল ইয়ং ও রবীন্দ্রের ওপেনিং জুটি ৭.৫ ওভারে ৪৮ রানের জুটি এনে দেয় নিউ জিল্যান্ডকে। এনগিডি ভাঙেন এই জুটি। ইয়ং ২৩ বলে ৩ চারে ২১ রান করে আউট হন। এরপরের গল্প রবীন্দ্র আর উইলিয়ামসনের। দুই সেঞ্চুরিয়ান রবীন্দ্র ও উইলিয়ামসন দ্বিতীয় উইকেটে গড়েছেন ১৬৪ রানের জুটি, যা চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ (আগের সর্বোচ্চ ২০০৪ আসরে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে নাথান অ্যাস্টল ও স্কট স্টাইরিসের ১৬৩)। বাংলাদেশের বিপক্ষে ১১২ রানের ইনিংস খেলা রবীন্দ্র আজ তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ৯৩ বলে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তাঁর পঞ্চম সেঞ্চুরি, সব কটিই আইসিসি টুর্নামেন্টে। মাত্র ১৩ ইনিংসে ৫ সেঞ্চুরি করে ভারতের শিখর ধাওয়ানের দ্রুততম পাঁচ সেঞ্চুরির (১৫ ইনিংসে) রেকর্ডও ভেঙেছেন রবীন্দ্র। তবে নিউ জিল্যান্ডের দলীয় রেকর্ড হয়েছে উইলিয়ামসনের সেঞ্চুরিতে। আগের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৮১ রান করে আউট হওয়া এই ব্যাটসম্যান প্রোটিয়াদের বিপক্ষে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন ৯১ বলে। যা এবারের আসরে তাঁর জন্য প্রথম হলেও নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে পঞ্চম। অন্য চারটির দুটি রবীন্দ্রর, একটি করে টম ল্যাথাম ও উইল ইয়াংয়ের। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আর কোনো আসরে কোনো দল এত বেশি সেঞ্চুরি করতে পারেনি। ২০০৬ আসরে ৪টি সেঞ্চুরি করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা। রবীন্দ্র–উইলিয়ামসনের রেকর্ড গড়া জুটি ভাঙে কাগিসো রাবাদার বলে রবীন্দ্র ক্লাসেনের হাতে ক্যাচ দিলে (১৩ চার ও ১ ছয়ে ১০১ বলে ১০৮)।

সেঞ্চুরির পর উইলিয়ামসনও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। উইয়ান মুল্ডারের বলে এনগিডির হাতে ক্যাচ দেন ৯৪ বলে ১০ চার ও ২ ছয়ে ১০২ রান করে। দুই ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরির সুবাদে ৪০ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ডের রান ছিল ৩ উইকেটে ২৫২। শেষ ১০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের ওপর ঝড় তোলেন ড্যারিল মিচেল ও গ্লেন ফিলিপস। মিচেল ৩৭ বলে ৪৯ রান করে ফিরলেও ফিলিপস অপরাজিত থাকেন ২৭ বলে ৪৯ রান করে। তার ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ১টি ছয়।

বিশাল পুঁজি নিয়ে বল হাতেও শুরুতেই সাফল্য পায় নিউ জিল্যান্ড। ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার রায়ান রিকেলটনকে ফিরিয়ে দেন ম্যাট হেনরি। এরপর অবশ্য দারুণ প্রতিরোধ গড়েন টেম্বা বাভুমা ও রাসি ভ্যান ডুসেন। তারা গড়েন ১০৫ রানের জুটি। শেষ পর্যন্ত বিপজ্জনক এ জুটি ভাঙেন মিশেল স্যান্টনার। তিনি ফিরিয়ে দেন টেম্বা বাভুমাকে। ফেরার আগে প্রোটিয়া অধিনায়ক করেন ৭১ বলে ৫৬ রান। তিনি ফেরার পর চেষ্টা করেছিলেন ডুসেন। তবে তিনি ৬৬ বলে ৬৯ রান করে স্যান্টনারের শিকার হয়ে ফেরেন সাজঘরে। দক্ষিণ আফ্রিকা বুধবার হেনরি ক্লাসেনের দিকে তাকিয়ে ছিল। তবে তাকে এদিন ডানা মেলার সুযোগ দেননি স্যান্টনার। ইনিংসের ২৯তম ওভারের ৪র্থ বলেই হেনরির ক্যাচে ফিরিয়ে দেন। ম্যাচের ভাগ্য তখনই লেখা হয়ে যায়। এরপর শুধুমাত্র প্রোটিয়াদের পরাজয়ের ব্যবধান কমান ডেভিড মিলার। তিনি এক প্রান্ত আগলে রাখেন। এক পর্যায়ে ঝড় তোলেন। শেষ পর্যন্ত ৬৭ বলে ১০ চার ও ৪ রানে ১০০ রানে অপরাজিত থাকেন৷ তবে প্রোটিয়াদের হার থেকে বাঁচাতে পারেননি। অসাধারন ব্যাটিংয়ের সুবাদে ম্যাচসেরা হয়েছেন রাচিন রবীন্দ্র।

আগামী রবিবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে ভারতের মোকাবেলা করবে নিউ জিল্যান্ড।

নিউজজি/সিআর

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন