শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ , ১৯ রমজান ১৪৪৫

বিদেশ

ফেসবুকে শুক্রাণু দাতা সন্ধান করছেন নারীরা

নিউজজি ডেস্ক ৮ এপ্রিল , ২০২১, ১১:০৯:৫৭

377
  • ছবি : ইন্টারনেট থেকে

ঢাকা: ফেসবুকে শুক্রাণু দাতা সন্ধান করছেন নারীরা। কারণ, টেস্টটিউব বেবির খরচ অনেক বেশি; তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুককে বেছে নিচ্ছেন তারা। এমন ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাজ্যে। সম্প্রতি বিবিসির প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, ব্রিটেনে যেসব দম্পতির সন্তান হচ্ছে না তাদের অনেকেই উপযুক্ত চিকিৎসা পান না জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থায়। ফলে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ থেকে শুক্রাণু দাতা খুঁজে নিচ্ছেন গর্ভধারণের জন্য।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পরিচয় গোপন করে এক দম্পতি জানিয়েছেন, এক বছর ধরে সন্তান নেওয়ার চেষ্টা করেও গর্ভধারণ হচ্ছিল না তাদের। পারিবারিক চিকিৎসকের পরামর্শে জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা ক্লিনিকে গিয়ে পরীক্ষা করে জানতে পারেন যে তাদের সঙ্গীর শুক্রাণুতে সমস্যা আছে। এমনকি তাদের গর্ভধারণ করতে হলে নিতে হবে কোনো একজন দাতার শুক্রাণু।

ওই দম্পতিকে শুক্রাণু দাতার একটি তালিকা দেওয়া হয় ক্লিনিক থেকেই। আর সেখান থেকেই ওই নারী পেয়ে গেলেন নিজের জাতিগোষ্ঠীর একজন উপযুক্ত দাতা যিনি এখনো কাউকে শুক্রাণু দেননি। ওই দাতার শুক্রাণু ব্যবহার করে ২০১৭ সালে প্রথম আইভিএফ বা কৃত্রিম গর্ভ সঞ্চারের চেষ্টা করেও কোনো কাজ হয়নি।

অবশ্য ক্লিনিক থেকে অন্য আরেকটি পদ্ধতির কথা বলা হলেও তা ব্যয়বহুল হওয়ায় এড়িয়ে যান ওই দম্পতি। এরইমধ্যে তারা নিজেরা বিয়ে করেছেন। ওই নারীর স্বামীই প্রস্তাব দিলেন অনলাইনে শুক্রাণু দাতার খোঁজ করার। বন্ধু বান্ধব ও পরিবারের লোকজন যাতে না জানতে পারেন সেজন্য ফেসবুকে ভুয়া একাউন্ট খোলেন তারা। কিছু গ্রুপে যুক্ত হয়ে পেয়েও যান কাঙ্ক্ষিত দাতার সন্ধান।

এরপর তারা ওই দাতার মেডিকেল পরীক্ষা, পারিবারিক ইতিহাস ও সুস্থতার দলিলপত্র পরীক্ষা করলেন। স্বামীকে সঙ্গে নিয়েই দেখা করলেন পার্কে। ছয় বারের পর অবশ্য একবার গর্ভধারণ করলেও তা নষ্ট হয়ে যায়। অবশ্য দাতা লোকটা প্রতিবার শুক্রাণু দেওয়ার জন্য ৬০ পাউন্ড খরচ নিত।

এ ধরণের কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে ব্রিটেনের আইনকানুনে কিছু অস্পষ্টতা আছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এরইমধ্যে শুরু হলো করোনা মহামারির লকডাউন। তখন তারা ভিন্ন একটি শুক্রাণু দাতা খুঁজে বের করলেন। এবং তারা বাড়িতে বসেই সেই কাজটা করলেন যেটা বাইরে টয়লেটে গিয়ে করতে হয়েছিল। আর এবার তাদের কাছে ধরা দিল সাফল্য। সন্তান সম্ভবা হলেন ওই নারী।

সাক্ষাৎকারে ওই নারী বলেন, ‘আমরা ভীষণ আনন্দিত। অনেক দিন চেষ্টার পর এখন আমাদের একটি সন্তান হতে যাচ্ছে, পরিবার হতে যাচ্ছে, যা আমরা দু’জনে অনেকদিন ধরে চেয়ে আসছি।’ অবশ্য এসব গোপনে করেছেন ওই দম্পতি যাতে স্বামীর অক্ষমতা প্রকাশ না পায়।

ওই দম্পতি ছাড়াও ফেসবুক মাধ্যমে যোগাযোগ হয়েছে এমন আরো তিনজন নারী ওই দাতার শুক্রাণু নিয়ে সন্তানের মা হয়েছেন। যার ফলে দান-করা শুক্রাণু থেকে জন্ম হয়েছে এমন সন্তানের বয়স ১৮ হলে তারা তাদের আসল পিতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে। ব্রিটেনে এমন একটি আইন হয়েছে ২০০৫ সালে।

আর ওই নারীর মতো পদ্ধতি নিয়ে চলেছেন ব্রিটেনের অসংখ্য নারী। 

যুক্তরাজ্যের ফাটিলিটি বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা এইচএফইএ-র চেয়ারপারসন স্যালি চেশায়ার জানিয়েছেন, এ ধরনের চুক্তিতে যারা জড়িত হয়েছেন তাদের সুরক্ষার জন্য এখনো ব্রিটেনে কোনো আইন নেই।

তাছাড়া কোনো ক্লিনিকের বাইরে শুক্রাণু বেচাকেনার ব্যাপারে গত পাঁচ বছরে কেউ পুলিশের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এমন কোনো নজিরও নেই। যা বিবিসি ওই দেশের পুলিশের কাছে খোঁজ করে দেখেছে।

আমরা লোকজনকে শুক্রাণু দান নিয়ে আলোচনা করতে দিয়ে থাকি ফেসবুকে। কিন্তু স্থানীয় আইন ভঙ্গ করে এমন যেকোনো কনটেন্ট সরিয়ে ফেলতে আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে কাজ করি বলে জানিয়েছেন ফেসবুকের একজন মুখপাত্র।

সূত্র : বিবিসি

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন