শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ , ২৭ শাওয়াল ১৪৪৬

সাহিত্য

সাহিত্যিক শহীদুল জহিরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নিউজজি ডেস্ক ২৩ মার্চ , ২০২৫, ১৪:৫৯:২৪

49
  • ছবি: ইন্টারনেট

ঢাকা: বাংলা গদ্য সাহিত্যে যিনি স্বল্প অথচ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তিনি হলেন শহীদুল জহির। তিনি ১৯৫৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পুরান ঢাকার নারিন্দার ৩৬ ভূতের গলিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ওয়াশিংটন ডিসির আমেরিকান ইউনিভার্সিটি ও বারমিংহাম ইউনিভার্সিটিতেও পড়ালেখা করেন।

তিনি ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে সহকারী সচিব পদে যোগ দেন। ২০০৮ এ তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সচিব পদে কাজ করে গেছেন। শহীদুল জহির ছিলেন চিরকুমার। তিনি ২০০৮ সালের ২৩ মার্চ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

ক্ষণজন্মা এ সাহিত্যিক ছিলেন প্রচার বিমুখ। পঞ্চান্ন বছর বয়সের জীবনে চেষ্টা করেছিলেন নিজের চিন্তা ভাবনাকে তার সৃষ্ট সাহিত্যকর্মে তুলে ধরতে। শহীদুল জহির তার জীবদ্দশায় মাত্র ৬ টি বই প্রকাশ করেছেন । সেগুলি হলো, ১. পারাপার , ১৯৮৫ - ছোটগল্প সংকলন; ২. জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা, ১৯৮৮ - প্রথম উপন্যাস; ৩. সে রাতে পূর্ণিমা ছিল,১৯৯৫ - উপন্যাস; ৪. ডুমুরখেকো মানুষ ও অন্যান্য গল্প , ২০০০ - ছোটগল্প সংকলন; ৫. ডলু নদীর হাওয়া ও অন্যান্য গল্প , ২০০৪ - ছোটগল্প সংকলন ও ৬. মুখের দিকে দেখি , ২০০৬ - উপন্যাস। তার কিছু অপ্রকাশিত বই প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। তার মৃত্যুর পর আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু , ২০০৯- উপন্যাস এবং ছোটগল্প ও উপন্যাস নিয়ে দুই খণ্ডের বই প্রকাশিত হয়েছে । তিনি কিছু ইংরেজি গল্পও অনুবাদ করেছেন।

তিনি বাংলা কথা সাহিত্যে অসামান্য অবদান রাখার জন্য কাগজ সাহিত্য পুরস্কার, প্রথম আলো বর্ষসেরা বই ১৪১৫ পুরস্কার, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার ও জেমকন সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন । বাংলা কথা সাহিত্যে নব্যধারার স্রষ্ঠা শহীদুল জহিরের চরিত গল্প ও উপন্যাসগুলি অন্যান্য সব সাহিত্যিকের থেকে স্বতন্ত্র।

বলা হয় যে লাতিন আমেরিকার লেখকদের লেখার জাদু-বাস্তববাদের ছোঁয়া তার লেখায় রয়েছে। এবং তাকে বাংলাদেশের গ্যাব্রিয়েল গারসিয়া মার্কেস বলা হয় । তিনি স্বীকার করেছেন যে দুইজন সমসাময়িক ঔপন্যাসিক সৈয়দ শামসুল হক ও আখতারুজ্জামান ইলিয়াস এবং সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ দ্বারা তিনি প্রভাবিত। তার কিছু গল্পের কাহিনী মার্ক্সবাদের দৃষ্টান্ত বহন করে। তার অনেক গল্পে তিনি ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট ব্যবহার করেছেন ।

শহীদুল জহির জনপ্রিয় লেখক ছিলেন না, সেটি হওয়ার কোনো ইচ্ছেও তাঁর ছিল না। বরং নিজেকে দাবি করতেন ‘ডিমান্ডিং লেখক’ হিসেবে; যিনি পাঠকদের কাছে প্রত্যাশা করতেন চিন্তার সক্রিয়তা। তিনি তাঁর স্বভাবসুলভ তীক্ষ্ণ বিদ্রূপ দিয়ে ক্রমাগত বিদ্ধ করে গিয়েছেন সুশীল সমাজ, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও বেনিয়া বাণিজ্য প্রবণতাকে। সারা জীবন ধরে বিরামহীনভাবে গভীর সংবেদন নিয়ে তিনি আমাদের জীবনের ছবি এঁকে গিয়েছেন এবং এসব বহুমাত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়েই তিনি হয়ে উঠেছেন বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য কথাকার।

নিউজজি/পিএম

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন