মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ , ৭ শাওয়াল ১৪৪৫

সাহিত্য
  >
গল্প

কয়েন

জাহিদ কাজী মে ১৮, ২০১৭, ১৬:১২:২৭

6K
  • কয়েন

একটা স্কুলের সামনে কৃষ্ণচূড়া গাছের নীচে রিকশাটা রেখে খানিকটা জিরিয়ে নেয় রমজান মিয়া। রিকশার গদিটা খুলে সিট আর হেলানো গদি বরাবর দিয়ে তার উপর শুয়ে জিরোয়। জিরাতে জিরাতে হয়তো একসময় ঘুমিয়ে পড়ে। এটা তার অভ্যেসে পরিণত হয়েছে এখন। আজকেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

এই যে যাবে?
কোথায়?
যাবে নাকি বলো? টাকা একটু বেশিই পাবে।
যাবেন কোনে? জায়গার নাম বলবেন তো। 
যদি বলি জাহান্নামে।
ওমা! একি কচ্ছেন। আপনার মতো হুজুরেরা বুঝি জাহান্নামে যাবি। তাহলি পরে আমাদের মতো লোকেরা যাবি কোনে।

একটা অট্টহাসি দিয়ে রমজান মিয়া এবার যাত্রীর দিকে আড় নজরে তাকায়। যাত্রীর পরনে ঢিলেঢালা জামা। জুব্বা পরা, মাথায় পাগড়ি। বলা যায়, পরহেজগার মানুষের মতো অনেকটা। চেহারায় যেন চাঁদের ঝলকানি। এমন লোক কখনো দেখেছে বলে মনে হয় না রমজান মিয়ার। মানুষটাকে একটু ভালো মনে হয় তার কাছে। এবার যেন আগাগোড়া ভালো করে দেখে নিচ্ছে সে।

কী হলো যাবে?
যাবো, ওঠেন।

প্রখর রোদ পড়েছে আজ। সূর্য ব্রিজ পেরিয়ে ঢালুতে নেমেছে। তাই তেজটা বাঁকানো। লোকটা উঠে বসে হুডটা উঠিয়ে দিতে বলে। রিকশাটা শক্ত করে ধরে হুড উঠায় রমজান মিয়া।

যাবো কোনদিকি?
বামে যাও।
 
ঠিক আছে, বলেই রিকশাটা ঘুরিয়ে নেয়। পেডেলে পা রেখে বলে- বুঝলেন হুজুর, দিনকাল ভালো না। দ্যাশের অবস্থাও ভালো না। আপনাকে অনেক সাহসী মনে হচ্ছে। তা আপনার বাড়ি কোনে?
 
লোকটা যেন থতমত খেয়ে যায়। বিষম খাওয়ার মতো অবস্থা তার। লোকটা তার জামার পকেট থেকে পান বের করে মুখে পুরে বলে- তা কোথায় হলে তুমি খুশি হবে?
 
একি কচ্ছেন। আমার তো বিদেশি লোক হলি পরে ভালো হয়। বিদেশিরা ন্যায্য ভাড়ার চেয়ে বেশি দেয় তো, সেজন্যি।
 
তাই, তাহলে ভেবে নাও আমি একজন বিদেশি।
কী যা তা বলছেন, ভেবে নিলে কি সবকিছু হয় নাকি?
হয় হয়, অনেক সময় হয়। তুমি যদি ভাবো যে একটা রাস্তা দিয়ে তুমি রিকশা চালিয়ে যাচ্ছো, কোনো যানজট নেই, কোনো ঝামেলা নেই, দুর্ঘটনার ভয় নেই, ভাবতে পারো না।
তাই কি হয় নাকি? ওটা জীবনেও সম্ভব হবিনা হুজুর।
ঠিক আছে চলো।
 
এভাবে চলতে চলতে অনেক দূর পথ চলে যায় রমজান মিয়া। যেতে যেতে অনেক গল্প হয়। সংসারের গল্প, জীবনের গল্প, দেশ-বিদেশের গল্প, ভৌতিক গল্প, কাল্পনিক গল্প, বাস্তব গল্প, অনেক অনেক গল্প, যে গল্প ফুরাতে চায় না। এর মাঝে কয়েকবার নেমে কোথায় যেন যায় লোকটা। সুযোগ বুঝে রিকশাটা টান দিতে পারতো রমজান মিয়া। কিন্তু তা সে করেনি। একবার ভাবে, লোকটা যে ব্যাগটা রেখেছে তার ভেতর আবার বোমা-টোমা নাইতো! দেখবে নাকি একবার খুলে। এই যাহ্ লোকটা এসে পড়েছে।
 
বেশ কবার খুলতে গিয়ে খুলতে পারে না ব্যাগটা। যা আছে কপালে তাই হবে ভেবে চলতে থাকে। লোকটা ছোট্ট একটা পোঁটলা হাতে নিয়ে গলিতে নেমে গেল। একবার সিরিজ বোমা ফুটেছিল এদেশে। রমজান মিয়ার সন্দেহ এবার আরো বেড়ে গেল। নাহ, ভালো করে দেখা দরকার। না হলে প্রশাসনের দারস্থ হওয়া দরকার। ধরিয়ে দিতে হবে এমন লোককে। আবার ভাবে নাকি পুঁটলিতে কোনো নেশা জাতীয় দ্রব্য। আজকাল যা অবস্থা পইড়িছে, হুজুর সেজে অনেকে তো ধরাও পড়িছে বেফাঁস কাজ করায়। যাক সেরকম হলি পরে একটা বিহিত করা যাবে। করেই বা কী? সে একজন রিকশাওয়ালা, তার ন্যায্য ভাড়া যদি সে পেয়ে যায় তাহলি পরে তার কিই বা বলার আছে। নানান চিন্তা মাথায় ভিড় করে রমজান মিয়ার।
 
একজন পথচারী জিজ্ঞেস করে, এই যে চাচা যাবেন নাকি? রমজান মিয়া তার ঘাড়ের গামছাটা দিয়ে শরীরের ঘাম মুছতে মুছতে বলে- না বাবা, ভাড়া আছে। রিজার্ভ।
 
আবার ভাবে লোকটা বিদেশি হলেও বাংলায় কী সুন্দর করে কথা বলে। বিশ্বাসই হয় না সে বিদেশি। লোকটা কি কোনো ব্যবসা করে? যদি তাকে সাথে নিতো, ব্যবসা করতে রমজান মিয়ারও ভালো লাগে যে। কিন্তু পুঁজি না থাকায় রিকশা চালাতে বাধ্য হয়েছে। কিংবা লোকটা যদি তাকে তার দেশে নিয়ে যেত। কী মজাই না হতো। যাক যা কোনোদিন হবে না  তা অযথা ভেবে কী লাভ।
চলো।
 
আবার চলতে থাকে রমজান মিয়া।
 
তা আপনার দ্যাশ কোনে হুজুর তা তো কইলেন না?
আমার দেশ, আমার দেশ অনেক দূরে।
আপনার দ্যাশের মানুষগুলা মনে হয় খুব সোন্দর। আমাদের দ্যাশের মানুষগুলা ত্যামন জুতের না, এজন্যি এদের সাথে আমার মেলে না। অনেক সময় টাকা না দিয়ে চইলি যায়। এদেশের মানুষ পরের ধনে পোদ্দারি করতি ভালোবাসে। আবার সবাই না, য্যামুন আমি। হা, হা, হা...
 
খিলখিল করে হেসে ওঠে রমজান মিয়া। তার সাথে লোকটাও হেসে ওঠে।
তাই নাকি! আচ্ছা এই বয়সে রিকশা না চালিয়ে ব্যবসাপাতি কিছু করলে হয় না?
হুজুরের আরো কথা। ব্যবসা করতি পুঁজি লাগে তা বুঝি আপনের অজানা।
তা কত টাকা পুঁজি হলে তোমার ব্যবসা হবে?
তাও, ধরেন পঞ্চাশ হাজার।
তোমার ছেলেমেয়ে কয়জন?
গোটা চারি। দুজন মেইয়ে। দুজন ছেইলে। বড় মেইয়ের বিয়ে হইয়িছে অনেক কষ্টে। ছেলে দুজন কোনোমতে কর্ম কইরি খাচ্ছে। ছোট মেইয়েটার বিইয়ে দিতে পারলি বাঁইচে যাইতাম। তা হঠাৎ আমার এ্যাতো খোঁজখবর ক্যান হুজুর?
না, এমনিতেই। তুমি তো আমার অনেক কিছুই শুনলে, তোমারটা শোনা দরকার না-
ঠিক বলিছেন। কিন্তু বইলি কী লাভ, কেউ কোনোদিন আমাকে সাহায্য করতি আসে নাই। মুখে অনেক বলিছে কিন্তু কাজের বেলায় ডাহা ফাঁকি।
দাঁড়াও, দাঁড়াও এখানে গাছের নীচে দাঁড়াও।
 
রমজান মিয়া রিকশার ব্রেক খুব করে কষে। গাছের ছায়ায় দাঁড়ায়। ঘাড়ের গামছা দিয়ে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মুছতে থাকে। আর ভাবে কত টাকা যে দেয়।
বলো কত দিতে হবে।
দেন হুজুর আপনার বিবেক।
 
লোকটা কয়েকটা চকচকা নোট বের করে রমজান মিয়াকে দেয়। নোট দেখে রমজান মিয়া ভাবে জাল টাকা না তো আবার। তা না হলে এ্যাতো চকচকে নোট... একটু সন্দেহ জাগে। জিহ্বায় দিয়ে চেক করে নেয় রমজান মিয়া। লোকটাকে এর আগে যেমন গলিতে ঢুকে পুঁটলি দিতে দেখেছে, তেমনি একটা পুঁটলি রমজান মিয়ার রিকশায় ফেলে লোকটা হন হন করে গাছের আড়ালে যে বাঁকা ছোট গলি, সেদিকে চলে যায়। আর বলে যায়, ভালো থাকো রমজান মিয়া। দেখা হবে আবার।
 
পুঁটলি খুলে রমজান মিয়া থ লেগে যায়। পুটলিতে স্বর্ণের মুদ্রা। এ্যাতো কয়েন! রমজান মিয়া ভাবে, কয়েনগুলো কি সে রেখে দেবে নাকি লোকটাকে ডেকে দিয়ে দেবে। তারপর একসময় সিদ্ধান্তে আসে রমজান মিয়া। সে এটা ফেরত দেবে। হুজুর হুজুর বলে ডাকতে ডাকতে গাছের আড়ালের বাঁকা পথের দিকে অনেকদূর যায় রমজান মিয়া। লোকটাকে আর দেখতে পায় না সে। ফিরে এসে রিকশার গদির নীচে পুঁটলিটা রেখে দ্রুত পেডেল চালাতে থাকে বাড়ির দিকে। যাক, এই টাকা দিয়ে সে একটা ব্যবসা করবে। পরে সময় সুযোগে লোকটার দেখা পেলে তার টাকা তাকে ফেরত দেবে। অনেক্ষণ চলতে চলতে বাড়ির কোনো রাস্তা সে খুঁজে পায় না। বেশ উদ্বিগ্ন দেখায় তাকে। টেনশন নিয়ে গাড়ি চালাতে চালাতে একসময় এক্সিডেন্ট করে বসে রমজান মিয়া। জ্ঞান ফিরলে দেখে সে একটা হাসপাতালে। তার বেডের পাশে ওই লোকটার মতো দুজন লোক তার সেবা-যত্ন করছে।
 
তা, চাচা অত জোরে জোরে রিকসা চালাচ্ছিলেন কেন? আপনার ভাগ্য ভালো, অল্পের জন্যি বাঁইচি গেছেন।
আমার রিকশাটা কোথায়? ঠিক আছে তো?
না, চাচা। রিকশা তো দুমড়ে মুচড়ে গেছে। ওটার আশা বাদ দিতি হবি। কেউ কেউ কুইড়ি নিয়ে লোহাপট্টির দিকি দৌড় দিয়েছে। এখন তো এ রকমই হয়। এক্সিডেন্ড হলি পরে উপকারের নামে ডাকাতি হয়। ভাগ্য ভালো অনেক পরে হলেও আপনাকে এখানে নিয়ে আসতি পেরেছি। রমজান মিয়া যেন এবার কান্না চেপে রাখতে পারে না। হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। কী একটা সুযোগ যেন তার আজও হাত ছাড়া হয়ে গেল।
এই যে শুনছেন। এই চাচা, চাচা যাবেন?
 
ধকপকিয়ে উঠে বসে রমজান মিয়া। হায় আল্লাহ এতক্ষণ কী তাহলে সে সপ্ন দেখছিল। হাই তুলে ঘুমটাকে বিদায় দেয়। হাত দুটো ওপরে তোলে। একটা একটা করে আঙুল ফোটাতে ফোটাতে বলে, হ্যাঁরে মা যাব। দাঁড়াও গদিটা একটু ঠিক কইরি নিই। তা যাবে কোনে মা?
যাবো তো অনেক দূর, সোনা পুকুর।
 
নামটা কী রকম পরিচিত মনে হয় রমজান মিয়ার কাছে। এটা তো স্বপ্নে দেখা সেই হুজুর কোনো এক ফাঁকে বলছিল আমি সোনা পুকুর চিনি কি না।
 
স্কুলের ঘণ্টা পড়েছে। ছাত্রীদের তুমুল ভিড়। রমজান মিয়া গদিটা ঠিক করতে গিয়ে দেখে স্বপ্নে দেখা পুঁটলিটা। তাড়াতাড়ি গদিটা বসিয়ে মেয়েটাকে নিয়ে জোরে জোরে রিকশা চালায় রমজান মিয়া। কেননা ওকে নামিয়ে দিয়েই দ্রুত তাকে বাড়ি যেতে হবে। পুটলিটার কথা কেউ যেন ঘুণাক্ষরেও টের না পায়।
চাচা খুচরা টাকা আছে?
কত টাকার নোট?
এই যে এটা।
 
মেয়েটি তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে বের করে দেয় একটা চকচকে নোট। বড় নোট।
 
ওমা! এ্যাতো বড় নোটের খুচরা কী আর আমাদের কাছে থাকেরে মা।
ঠিক আছে চাচা, পুরোটা নাও।
না, না তা কী কইরি হয়।
নাও তো যাও। বলেই মেয়েটি বাড়ির ভেতর ঢুকে যায়। রমজান মিয়া টাকাটা হাতে নিতেই হুজুরের টাকা দেয়ার কথা মনে পড়ে। একদম একই রকম টাকা। কোনো উনিশ-বিশ নেই। এটা কী করে সম্ভব। না, এ হতেই পারে না। চোখের পাওয়ারটা ইদানীং কমে আসছে রমজান মিয়ার। কোনোখানে ভুল হচ্ছে না তো। এখনকার টাকাগুলো চেনাও মুশকিল। কোনটা পাঁচ টাকার নোট কোনটা পঞ্চাশ টাকার নোট বোঝা যায় না সহজে।
 
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়। শখ করে আজ মাছ বাজারে গিয়ে একটা মাছ দাম করে। ৫ শ টাকা দাম চায়। দোকানি বলে, রমজান মিয়া তোমার এগুলো দিয়ে পোষাবিনি। তুমি বরং ওই কমদামের মাছের দোকানে যাও। রমজান মিয়া যেন এবার নিজেকে বেশ অপমানিত মনে করে। চোখ লাল করে কটমটিয়ে দোকানির দিকে চায়।
 
কিরে ভাই খায়া ফেলাইবিনি আমারে। যাও তো এখান থিনি যত সব...।
 
রেগে ওঠে রমজান মিয়া, ওই ব্যাটা কওদিনি মাছটা কি আমি কিনবার পারি না। পকেট থেকে বড় নোটটা বের করে দোকানির দিকে ছুঁড়ে মেরে বলে, দাওদিনি মাছটা। দোকানি নোটটা তুলে দেখে দশ টাকার একটা চকচকে নোট। এই কাণ্ড মাছ বাজারের যারা দেখল তারা সবাই হাসাহাসি করল।
 
ধুর মিয়া আপনি কী শুরু কইরিছেন। যান তো। দশ টাকার নোট দ্যাখায়া ব্যাটায় আইছে বড় মাছ কিনতো। অবজ্ঞা আর তাচ্ছিলভরা কণ্ঠে দোকানি রমজান মিয়ার উদ্দেশ্যে কথাগুলো ছুঁড়ে দেয়।
 
রমজান মিয়া নোটটা হাতে নিয়ে আবার সূক্ষ্ম নজরে দেখে। না, ঠিকই তো আছে। একজন ছেলেকে দেখায়-এই যে বাবা দেখো তো নোটটা কয় টাকার। ছেলেটি নোটটা দেখে বলে, চাচা এটা তো দশ টাকার নোট। রমজান মিয়ার যেন বিশ্বাসই হতে চায় না। আজকাল সবাই কী যে চোখে দেখে। না, হতেও পারে। আমারই চোখের দোষ নয় তো মনের ভুল। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাড়ির দিকে পা বাড়ায় রমজান মিয়া। শেষ ভরসা তার পুঁটলিটা। এখানে নয় একেবারে বাড়িতে গিয়ে খুলবে সেটা।
 
খাওয়া-দাওয়ার পর বিবিকে ডাক দিয়ে বলে- আজকে একটা চমক দেবো তোমারে। বিবি মনে মনে ভাবে কতদিন ভালো কাপড় পরা হয় না তার। ত্রিশ বছর আগে একটা নাকফুল দিয়েছিল রমজান মিয়া। তাও আবার বিয়েতে। নাকি অন্যকিছু। কী এমন জিনিস যাতে আমি চমকে যাব।
কী চমক দিবা গো-
দাঁড়াও, তুমি একটু বসো আমি আসছি, বলেই রমজান মিয়া রিকশার কাছে যায়। আড় নজরে চেয়ে থাকে বিবি। রিকশার গদি তুলে দেখে পুঁটলিটা ঠিকঠাক আছে। চোখ জ্বলজ্বল করে রমজান মিয়ার। বিবিকে নিয়ে এসে দেখায়- খোলো, আহা, খোলো না। চমকটা দেখতে পাবে।
কী আছে এটাতে?
খুলতি কইছি খোলো। এ্যাতো কথা বলো কী জন্যি।
বিবি এবার পোঁটলাটার বাঁধন খুলে দেখে ভেতরে কিছু অচল পয়সা। অনেক আগের পয়সা মনে হয়।
কী চমক না?
এইগলা তো অচল পয়সা। এইগলা দিয়ে কিছুই হবি নানে।
ধুর, বউ আমার কী কয়। এইগলা হইলো গিয়া স্বর্ণ মুদ্রা বুঝলা। দেখো কী চকচক করতাছে। এটার একটার দাম বহুত।
পাইলা কোনে?
হুজুর দিছে হুজুর। সে এক অন্যরকম কাহিনি। তুমি বুঝবা না। এই কথা ভুলেও কাউরে জানি কও।
ধরো তোমার অচল পয়সা। খালি খালি আমার বুকের ধকপকানি তুলিছো। আমি ভাবলেম না জানি কী আনছো আমার জন্যি।
সকালে একটা কয়েন এক মুরুব্বিকে দেখাতে নিয়ে যায় রমজান মিয়া।
হু, রাইখে দে কাজে লাগবো। অনেক পুরান কয়েন। এটা ভাগ্য পরিবর্তনের কয়েন।
রমজান মিয়া মুরুব্বিকে বলে, দিমুনে তোমারে দুইটা।
 
এরপর যারে দেখায় সেই চিনতে পারে না এই কয়েনগুলো। রমজান মিয়া এবার একা একাই বক বক করে আর হাঁটতে থাকে। মাঝে মাঝে ইতিউতি তাকিয়ে হুজুরকে খোঁজে।
 
হুজুরের দেখা পাইলি, এটা দিয়ে মুক্ত হতি পারতাম। খালি খালি আমারে আশা দেয়...।
 
 
 

নিউজজি/এসএফ

 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন