শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ , ২০ শাওয়াল ১৪৪৬

সাহিত্য
  >
গল্প

ভেসে গেছে মায়ের কবর

হাবিব মোস্তফা সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৮, ১৩:৩৫:৫৮

6K
  • ভেসে গেছে মায়ের কবর

রাজউকের ফুটপাত থেকে পাঁচ হাজার টাকা দামের বোয়াল মাছ কিনার সামর্থ্য নেই রুমির। সারা মাসের বাজার খরচ সামলাতে হয় গুনে গুনে-অনেক হিসেব করে। নূরজাহানের জন্য পছন্দসই একটি গহনা কিনতে গিয়ে বারবার জুয়েলার্স-এর দরজা থেকে ফিরত আসে, স্ত্রীকে সান্ত্বনা দেয় সামনের ইনক্রিমেন্ট পেলেই কিনে দিবে। ইনক্রিমেন্ট হয়- বাড়িওয়ালা বাসাভাড়া বাড়ানোর নোটিশ দেয়; স্ত্রীকে দেয়া প্রতিশ্রুতির কথা ভুলে যেতে হয় রুমিকে।

একদিন বুকে প্রচণ্ড ব্যথায় মাঝরাতে ঘুম ভাঙে নূরজাহানের। রুমির ঘুমে ব্যাঘাত হবে তাই তাকে না ডেকে ওমিপ্রাজল খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে নূরজাহান। দুদিন পরে আবার তীব্র ব্যথা। রুমিকে জানায় নূরজাহান।

-ডাক্তার দেখাও, দেখো কি বলে।

ডাক্তার জানায় বুকে মরণব্যাধি বাসা বেঁধেছে।

ব্রেস্ট ক্যান্সারের ট্রিটমেন্ট তো অনেক ব্যয়বহুল। মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল।রুমি কোথায় পাবে এত টাকা?

নূরজাহান বলল, শুনো- আমি জেনেছি, চিকিৎসা করলেও এ ধরনের রোগী বেশি দিন বাঁচে না। তাই তুমি ঋণ করতে যেও না। আমি মরে গেলে ‘জোবাইদা বড় হওয়ার আগ পর্যন্ত বিয়ে করো না। কারণ নতুন মায়ের অনাদর আমি কবরে শুয়ে সহ্য করতে পারবো না।’

নানীর বাড়িতে এই দশ বছরে অনেক বড় হয়ে গেছে জোবাইদা। একদম মায়ের মতই সুন্দরী হয়েছে সে। আর রুমির নতুন সংসারে এসেছে দুই সন্তান। তারা জোবাইদাকে চিনে না। জোবাইদাও চিনে না পদ্মার স্রোতে ভেসে যাওয়া মায়ের কবর…

নিউজজি/এসএফ

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন