শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ , ১০ জিলকদ ১৪৪৫

দেশ

চলতি মৌসুমে শক্তিশালী বজ্রপাতের শঙ্কা

নিউজজি ডেস্ক ৪ মে, ২০২৪, ১৮:২১:০০

78
  • চলতি মৌসুমে শক্তিশালী বজ্রপাতের শঙ্কা

ঢাকা: প্রচন্ড তাপপ্রবাহের মধ্যে যখন হঠাৎ বৃষ্টি হলো, তখন সেই বৃষ্টির সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ছিল তীব্র বজ্রপাতও। গত বৃহস্পতিবার (২ মে) দেশের নানা প্রান্তে বজ্রপাতে ১১জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এ থেকে রক্ষার উপায় কী? সাধারণ মানুষের কাছে দুর্যোগ থেকে বাঁচার উপায় পৌঁছে দেয়াই সবচেয়ে উপযোগী, এমনটা মত আবহাওয়া সংশ্লিষ্টদের।

তারা বলছেন, বজ্রপাতের সময় আতঙ্কিত হওয়ার সুযোগ নেই। বরং সতর্কভাবে নিজেকে নিরাপদ রাখতে হবে। ঘরের ভেতর থাকলেও মানতে হবে কিছু কৌশল। আর বাইরে থাকা অবস্থায় খুঁজে নিতে হবে নিরাপদ কংক্রিটের আশ্রয়।

সাধারণত বাংলাদেশে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত বজ্রপাত হয়। আর গেলো কয়েকবছর ধরে সেই বজ্রপাতে ঘটছে ব্যাপক প্রাণহানি। আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা অবশ্য বলছেন, বজ্রপাতের সংখ্যা বাড়েনি বরং বেড়েছে মৃত্যুর খবর জানার পরিমাণ। বজ্রপাতে আহতও হন অনেকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন ড. ফাতিমা আক্তার বলেন, বজ্রপাতের পরিমাণ বা সংখ্যা বেড়েছে, এ ক্ষেত্রে আমার কিছুটা সন্দেহ আছে। আমি বলবো, আগের চেয়ে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আমাদের এখন বেশি হয়। কারণ, আমাদের সরকারের ব্যবস্থা আছে, তাতে অনেক আগেই জলীয় বাষ্প শনাক্ত হয়।

কিন্তু কেনো হয় বজ্রপাত বা বজ্রঝড়? তাপমাত্রার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বজ্রপাতের সম্পর্ক। তাপমাত্রা যত বাড়বে, তখন জলীয় বাষ্প বাড়বে, বাড়বে মেঘে মেঘে ঘর্ষনে সৃষ্ট বজ্রপাতও। আর তাই চলতি মৌসুমে শক্তিশালী বজ্রপাতের শঙ্কাও রয়েছে।

ড. ফাতিমা আক্তার আরও বলেন, উত্তপ্ত পৃথিবীতে কিন্তু সব রকম এক্সট্রিম ঘটনার পরিমাণও বেড়ে যাবে। কারণ, যত উত্তপ্ত বাতাস, তত বেশি আমরা বলি অস্থিতিশীল বায়ুমণ্ডলে আপদ বেশি তৈরি হয়। এক্ষেত্রে তাপ সঞ্চালন যত বেশি বাড়বে তত বেশি মেঘ, বৃষ্টি ও বজ্রপাত হবে।

আবহাওয়াবিদ খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, এ সময়টাতে তাপমাত্রা বেশি থাকে, ভূ-পৃষ্ট উত্তপ্ত হয়, পরে মেঘ তৈরি হয়, যেটা বজ্রমেঘে পরিণত হয়।

ফায়াস সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে বজ্রপাত থেকে রক্ষার নানা কৌশল তুলে ধরা হয়েছে। বজ্রপাতে অধিকাংশ মৃত্যু ঘটে হাওর অঞ্চলে। আর মারা যায় গবাদিপশুও। তাই বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি রোধে অঞ্চলভিত্তিক পরিকল্পনায় জোর দিচ্ছেন তারা।

আবহাওয়া সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিপদ আসবেই। কিন্তু প্রাণহানি কমাতে সতর্ক থাকার বিকল্প নেই। তাই বজ্রপাত থেকে রক্ষার উপায় সর্বস্তরে পৌঁছানোর তাগিদ তাদের।

বজ্রঝড় শুরুর প্রথমে বিদ্যুৎ চমকানি বা বজ্রপাত হয় না। শুরুতে একটু কালো মেঘ তৈরি হয়। সামান্য বৃষ্টি আর হালকা বিদ্যুৎ চমকায়। তখনই আগাম সতর্কতার সঙ্গে সরে যেতে হবে নিরাপদে।

খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, কেউ ক্ষেতে কাজ করছে, তখন বজ্রপাতের শঙ্কা থাকলে পাশের আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিতে হবে। তাহলে প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব।

ড. ফাতিমা আক্তার বলেন, সাধারণত বিকেল থেকে রাতের মধ্যে বজ্রপাত বেশি হয়। তাই যারা কৃষি বা খোলা মাঠে কাজ করেন, তারা ভোরে কাজ করতে পারেন।

বজ্রপাত রোধে বিল্ডিং কোড মেনে প্রতি ভবনে বজ্রনিরোধক দণ্ড স্থাপন নিশ্চিতে জোর দিচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। সেইসঙ্গে তালগাছের মতো দীর্ঘ গাছ রোপনে উৎসাহিত করা হচ্ছে। কিন্তু সেই গাছ সড়কের পাশে নয় বরং খোলা মাঠে লাগালেই বেশি কার্যকর বলে মনে করেন আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা।

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন