শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ , ৯ জিলকদ ১৪৪৫

শিল্প-সংস্কৃতি

ওস্তাদ আবেদ হোসেন খানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নিউজজি প্রতিবেদক ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ০০:২৮:১২

86
  • ওস্তাদ আবেদ হোসেন খানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ, সুরকার, স্বরলিপিকার ও সঙ্গীত পরিচালক ওস্তাদ আবেদ হোসেন খান ১৯৯৬ সালের আজকের এই দিনে (২৯ এপ্রিল) মৃত্যুবরণ করেন।

আবেদ হোসেন খান ১৯২৯ সালের ১ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে এক বিখ্যাত সঙ্গীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁন ছিলেন দেশবরেণ্য সঙ্গীতবিদ। তার মাতার নাম উমর-উন-নেসা খানম।

আবেদ হোসেন প্রথমে পিতার নিকট সেতার শিখে পরে স্বীয় অধ্যবসায়বলে অচিরেই একজন দক্ষ সেতারবাদক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজে স্নাতক পর্যন্ত অধ্যয়নের পর সম্পূর্ণরূপে সঙ্গীত সাধনায় মনোনিবেশ করেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকা বেতারকেন্দ্রে ‘নিজস্ব শিল্পী’ হিসেবে যোগদান করেন। সঙ্গীতের স্বরলিপি প্রণয়নেও তিনি পারদর্শী ছিলেন। ১৯৬৬ সালে জেনেভায় অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সেতার পরিবেশন করেন। 

১৯৭৪ সালে ভারতের কলকাতা, মাদ্রাজ, দিল্লি, মুম্বাই ও শ্রীনগরে অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া রেডিও মিউজিক কনফারেন্সে সেতার পরিবেশন করে তিনি বিপুল পরিচিতি লাভ করেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান ও ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে সেতার পরিবেশন করে বিদেশে উচ্চাঙ্গসঙ্গীতকে জনপ্রিয় করে তোলেন তিনি।

তার রচিত সুর-লহরী (৩ খন্ড) গ্রন্থটি সঙ্গীতজগতে এক অমূল্য সম্পদ; এটি বিভিন্ন শ্রেণির সঙ্গীত বিষয়ের পাঠ্যতালিকার অন্তর্ভুক্ত। ঢাকার সঙ্গীত কলেজ প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম এবং সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ে সঙ্গীতের ইতিহাস, থিওরি ও ব্যবহারিক বিষয়ে অধ্যাপনা করেন। 

১৯৭৩ সালে পদ্ধতিগতভাবে উচ্চাঙ্গসঙ্গীত শিক্ষা দানের জন্য তিনি ‘ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ সঙ্গীত নিকেতন’ নামে একটি সঙ্গীত একাডেমি স্থাপন করেন এবং আমৃত্যু তার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আবেদ হোসেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির একজন আমন্ত্রিত সঙ্গীত প্রশিক্ষক ও বিশেষজ্ঞ লেকচারার ছিলেন। তিনি ফোর্ড ফাউন্ডেশনের অর্থানুকূল্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত গুরুশিষ্য পরম্পরা (mentor fellowship in music) পদ্ধতিতে উচ্চাঙ্গসঙ্গীত শিক্ষাদান কোর্সে বিশেষজ্ঞ-প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। বেতার ও টেলিভিশনে নিয়মিত সেতার ও সরোদ পরিবেশন করতেন। অর্কেস্ট্রা রচনা ও পরিচালনায় তিনি অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন। বাংলাদেশে সঙ্গীতের উন্নতি ও প্রসারের ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।

দীর্ঘ ৩৬ বছর বেতারে সঙ্গীত পরিচালকের দায়িত্ব পালন করার পর ১৯৮৬ সালে তিনি মুখ্য সঙ্গীত প্রযোজক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে প্রায় ১০ বছর চুক্তিভিত্তিতে এ দায়িত্ব পালন করেন।

সঙ্গীতে অনন্য সাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৮৫ সালে ‘একুশে পদক’ দিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করে। এ ছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি (বাফা), ইউনেস্কো ও সরকারী সঙ্গীত মহাবিদ্যালয় যুগ্মভাবে তাকে ‘জাতীয় সঙ্গীত সম্মেলন সম্মাননা ২০০২’ সম্মাননা প্রদান করে। তাছাড়া সদারঙ্গ সঙ্গীত সমারোহ, সুরের আলো সঙ্গীত একাডেমীসহ বহু সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান তাকে সম্মানিত করে।

নিউজজি/রুআ

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন