রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ , ১১ জিলকদ ১৪৪৫

খেলা

হৃদয়-মাহমুদউল্লাহ’র ব্যাটিংয়ে মান বাঁচিয়েছে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার মে ৫, ২০২৪, ২২:১৪:৩৮

145
  • ৩৩ রানের ম্যাচ উইনিং ইনিংসের পথে তাওহিদ হৃদয়ের একটি শট। ছবি-ক্রিকইনফো

জিম্বাবুয়ে : ১৩৮/৭ (২০.০ ওভারে)

বাংলাদেশ : ১৪২/৪ (১৯.৩ ওভারে)

ফল : বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী।

প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ : তাওহিদ হৃদয় (বাংলাদেশ)।

আইপিএলের চলমান আসরে আড়াইশ প্লাস স্কোর হয়েছে এ পর্যন্ত ৮টি। তিনশ ছুঁই ছুই স্কোরও হয়েছে। অথচ, চট্টগ্রামে টি-টোয়েন্টি সিরিজের জিম্বাবুয়ের ১৩৯ রানের চ্যালেঞ্জ পাড়ি দিতে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে হয়েছে ১৯তমওভার পর্যন্ত।

মাহমুদউল্লাহ (১৬ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ২৬*) এবং হৃদয় (২৫ বলে ৩ চার, ৩ ছক্কায় ৩৭*) বাঁচিয়েছেন বাংলাদেশের মান। ফিনিশারের ভুমিকায় অবতীর্ন এই জুটির ব্যাটিংয়ে ৯ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে জিতে টানা দ্বিতীয় জয়ে সিরিজ জয়ের আবহ পাচ্ছে বাংলাদেশ দল।  

ছন্দে থেকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশনে যেতে চায় বাংলাদেশ। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব উৎরে যেতে ব্যর্থ জিম্বাবুয়েকে নিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ আয়োজন কতোটা যথার্থ, সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। তার উপর ব্যাটিংয়ের পরীক্ষা করার সুযোগই নিচ্ছে না বাংলাদেশ দল। টানা ২ ম্যাচে টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়ে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট রেখে গেছে প্রশ্ন। 

দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে বোলারদের সক্ষমতা দ্বিতীয় ম্যাচেও দেখেছে চট্টগ্রামের দর্শক। প্রথম ম্যাচে দুই পেসার তাসকিন-সাইফউদদ্দিনের বোলিংয়ে ১২৪/১০-এ থেমেছে জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় ম্যাচেও তাসকিন দ্যুতি (৪-০-১৮-২) দেখেছে দর্শক।

অফ স্পিনার শেখ মেহেদীও করেছেন নিয়ন্ত্রিত বোলিং (৪-০-১৮-১)। তবে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে জিম্বাবুয়েকে ছিন্নভিন্ন করার (৩৮/৪) পরও জিম্বাবুয়েকে অল আউট করতে পারেনি। বরং প্রথম ইনিংসের চেয়ে বেশি স্কোর (১৩৮/৭) করেছে জিম্বাবুয়ে। 

শেষ পাওয়ার প্লে-এর ৩০ বলে সাইফউদ্দিন-রিশাদের উপর চড়াও হয়ে জিম্বাবুয়ে যোগ করেছে ২ উইকেট হারিয়ে ৫২ রান।

১ ওভারের দ্বিতীয় স্পেলে রিশাদ ২ রানে সিকান্দার রাজা (৩), মান্দাদে (০)-কে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তবে ১৬ তম ওভারে খরচা তার ১৪ রান। শেষ পর্যন্ত তার বোলিং ৪-০-৩৩-২। ২ ওভারের প্রথম স্পেলে (২-০-৬-১) কি দারুণ বোলিংই  না করেছিলেন পেসার সাইফউদ্দিন। গাম্বিকে (৩০ বলে ১৭) ফিরিয়ে দেয়ার উৎসবটা শেষ ওভারে ১৮ রান খরচায় মাটি করে দিয়েছেন। ১ উইকেটের বিপরীতে ৩৭ রান খরচা একটু বেশিই মনে হচ্ছে।   

স্কোরশিটে ৪৪ উঠতে ৫ উইকেট হারানোর পর ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে জোনাথন ক্যাম্পবেল-ব্রায়ান বেনেটের ৪৩ বলে ৭৩রানের কারণেই চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেয়েছে জিম্বাবুয়ে।

সাবেক অধিনায়ক অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল এক সময়ে বাংলাদেশকে দিয়েছেন বহুবার যন্ত্রনা। তার ছেলে জোনাথন ক্যাম্পবেল টি-টোয়েন্টি অভিষেকে বাবার প্রতিচ্ছবি হয়ে নিজেকে হাজির করেছেন। অভিষেকেই হতে পারতেন জিম্বাবুয়ের ইতিহাস। তবে ১ রানের মাথায় শেখ মেহেদীর বলে সুইপ করতে যেয়ে শূন্যে বল তুলে দিয়েছিলেন।

উইকেট কিপার জাকের আলী অনিক সেই সহজ ক্যাচ ছেড়ে দিয়ে এই অভিষিক্তকে দিয়েছেন তাঁতিয়ে। ব্যাটে কালবৈশাখী ঝড় তোলা (২৪ বলে ৪ চার, ৩ ছক্কায় ৪৫) জোনাথন থেমেছেন ৪৫ রানে। ১৮তম ওভারে শরিফুলকে মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছক্কা মারতে যেয়ে দিয়েছেন ক্যাচ।পার্টনার ব্রায়ান বেনেট ২৯ বলে ২ চার, ৩ ছক্কায় ৪৪ রানে ব্যাটিংয়ে ছিলেন।

জবাব দিতে এসে তানজিদকে (১৯ বলে ১ চার, ১ ছক্কায় ১৮) হারিয়ে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে ৪১/৪ স্কোরে সহজ জয়ের আভাস ছিল।

এই ম্যাচে অফ ফর্ম থেকে বেরিয়ে আসতে ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করেও নিজেকে ফিরে পাননি। ২১ রানের মাথায় সিকান্দার রাজার বলে জংগের হাতে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়ার পরও ইনিংস বড় করতে পারেননি। যোগ করতে পেরেছেন আর মাত্র ২টি রান।তবে লুক জংগের এক ওভারে শান্ত লং অনে (১৫ বলে ১ ছক্কায় ১৬) এবং লিটন (২৫ বলে ২৩) ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিলে ম্যাচে উত্তেজনা বাসা বাধে। বাংলাদেশকে চাপে ফেলেছে নাগারাভার দ্বিতীয় স্পেল (১-০-৩-১)।

জাকের আলী অনিককে (১৫ বলে ১ ছক্কায় ১৬)  দুর্দান্ত একটি ডেলিভারিতে বোল্ড করে ডেথ ওভারে চাপে ফেলে দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। শেষ ৩০ বলে ৩৬, শেষ ২৪ বলে ৩৩ রানের টার্গেট সহজ করে দিয়েছেন তাওহিদ হৃদয়-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ১৭তম ওভারে জংগে ১৬ এবং ১৮তম ওভারে মুজারাবানি ১৫ রান খরচ করলে ৯ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে জিতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে বাংলাদেশ।  অবিচ্ছিন্ন এই জুটির ২৯ বলে ৪৯ রানে মান বাঁচিয়েছে বাংলাদেশ দল। 

এই ম্যাচ চলাকালে দু'বার বৃষ্টি হানা দিয়েছে। প্রথম দফায় ৮.২ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর যখন ৫৬/১, তখন জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এক পশলা বৃষ্টিতে খেলা স্থাগিত ছিল মাত্র ৫ মিনিট। দ্বিতীয় দফায় ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর যখন ৬৩/৩, তখন এক পশলা বৃষ্টিতে ২০ মিনিট স্থগিত ছিল ম্যাচ। তবে বৃষ্টির কারণে ওভার কার্টেল হয়নি। তাতেই বড় বাঁচা বেঁচে গেছে বাংলাদেশ।

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন