সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ , ১২ জিলকদ ১৪৪৫

খেলা

সাকিব-মোস্তাফিজ-তাসকিনে আত্মসম্মান বাঁচিয়েছে বাংলাদেশ

শামীম চৌধুরী মে ১০, ২০২৪, ২২:০৬:১৭

197
  • মোস্তাফিজকে উইকেট শিকারে সাকিবের অভিনন্দন। ছবি-বিসিবি

বাংলাদেশ :১৪৩/১০ (১৯.৫ ওভারে)

জিম্বাবুয়ে : ১৩৮/১০ (১৯.৪ ওভারে)

ফল : বাংলােদেশ ৫ রানে জয়ী।

প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ : মোস্তাফিজুর রহমান। 

এক সময়ে জিম্বাবুয়ে ছিল প্রবল প্রতিপক্ষ। সেই অতীতই ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ দল। উত্তাপ ছড়ানো সিরিজের ৪র্থ ম্যাচে সাকিব (৪/৩৫), মোস্তাফিজ (৩/১৯), তাসকিনের (২/২০) বোলিংয়ে ৫ রানে জিতে আত্মসম্মান বাঁচিয়েছে বাংলাদেশ।  

 আগে ব্যাটিং করে বড় স্কোরের প্র্যাকটিসটা হচ্ছে না বাংলাদেশ দলের। বাংলাদেশ দলকে সেই প্র্যাকটিসের সুযোগ দিয়েছে জিম্বাবুয়ে, টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে।

সৌম্য একাদশে ফেরায় দীর্ঘদিন পর দুই বাঁ হাতি ওপেনারের কম্বিনেশন দেখেছে দর্শক। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে উইকেটহীন ৫৭, ওপেনিং জুটির ৬৮ বলে ১০১ রানে গ্যালারিতে ছিল উৎসবমুখর।

তবে ১৫ মাস পর ওপেনিং পার্টনারশিপের সেঞ্চুরিতেও জিম্বাবুয়েকে রান পাহাড়ে চাপা দিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। অফ স্পিনার বেনেট (৩-০-২০-২), পেসার নাগারাভা (৪-০-২৭-২) ও জংগের (৩-০-২০-৩) বোলিংয়ে বাংলাদেশ থেমেছে ১৪৩/১০-এ।

সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে তামিমের অভাব পূরণে ওপেনিংয়ে তরুণ বাঁ হাতি তানজিদ হাসান তামিমকে সেট করার পরীক্ষায় টিম ম্যানেজমেন্ট সফল। টি-টোয়েন্টি অভিষেকে ফিফটি (৬৭*) উদযাপন করা এই ওপেনার সিরিজের চতুর্থ ম্যাচেও করেছেন ফিফটি (৩৭ বলে ৭ চার, ১ ছক্কায় ৫২)।

মিরপুরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন ম্যাচে শুরুটা করেছেন তানজিদ প্রথম ওভারে মুজারাবানিকে থার্ডম্যান দিয়ে বাউন্ডারি শটে। পরের ওভারে সিকান্দার রাজাকে মেরেছেন ২টি বাউন্ডারি। নাগারাভার প্রথম ওভারেও মেরেছেন ২টি বাউন্ডারি।

ফারাজ আহমেদকে ডিপ মিড উইকেটের উপর দিয়ে পূর্ব গ্যালারিতে যে ছক্কা মেরেছেন, তার দূরত্ব ৮৪ মিটার। ৩৪ বলে দ্বিতীয় ফিফটি পূর্ণ করার পর ৫১ রানের মাথায় দিয়েছিলেন ক্যাচ। সিকান্দার রাজার বলে লং অফে বেনেট সহজ ক্যাচ ড্রপ করার পরও ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। জংগের দ্বিতীয় স্পেলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে থেমেছেন। 

ইনজুরি থেকে সেরে উঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনে সৌম্য শুরুটা করেছিলেন সতর্ক দৃষ্টিতে। বেনেটকে রিভার্স সুইপে থার্ডম্যান দিয়ে ছক্কায় পেয়েছেন ছন্দ। মেরেছেন জংগেকে এক্সট্রা কাভার দিয়ে ছক্কা। তবে পার্টনার তানজিদকে হারিয়ে শোকাহত সৌম্য থেমেছেন জংগের ইয়র্কারে এলবিডাব্লু হয়ে (৪৩ বলে ৩ চার, ২ ছক্কায় ৪১)।

শেষ ৪২ রানে ১০ উইকেট! স্কোরটা ১৮০ ছাড়িয়ে যেতে পারেনি পুরোনো বলে ব্যাটিং ব্যর্থতায়। বিশেষ করে পাওয়ার হিটিংয়ের অক্ষমতায়

শেষ পাওয়ার প্লে'র ৩০ বলে দুঃসহ পরিস্থিতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। মাত্র ২০ রান যোগ করে হারিয়েছে শেষ ৫ উইকেট। সিকান্দার রাজার শেষ ওভারে ইনফর্ম তাওহিদ হৃদয় ডিপ স্কোয়ার লেগে ক্যাচ দিলে (৮ বলে ১২) বড় স্কোরের পথে তৈরি হয়েছে প্রতিবন্ধকতা। 

সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনটা ছিল হতাশার। ১০ মাস পর টি-টোয়েন্টিতে ফিরে বেনেটের বলে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে বোল্ড হয়েছেন তিনি (৩ বলে ১)। একই ওভারে শান্তও হয়েছেন বোল্ড (৭ বলে ২)। জাকের আলী অনিক ও হতাশ করেছেন। দিয়েছেন থার্ডম্যানে ক্যাচ (৭ বলে ৬)।

 ১৪৪ রানের চ্যালেঞ্জ দিয়ে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে তাসকিনের ২ স্পেল (১-০-৪-১ ও ১-০-২-১) এবং সাকিবের ১ স্পেলে (২-০-১৩-১) জিম্বাবুয়েকে ব্যাকফুটে (৩৮/৩) নামিয়েছে বাংলাদেশ। তবে ইনিংসের মাঝপথে হৃদয়, জাকের আলী অনিকের ক্যাচ ড্রপে ছিল শঙ্কা। চতুর্থ উইকেট জুটির ৩০ বলে ৩৫ রানে লড়াকু সমাপ্তির আভাস দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। সেখান থেকে মোস্তাফিজের তৃতীয় স্পেলে (১-০-২-২) বার্ল (২০ বলে ১৯) এবং জংগে (২ বলে ১) ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিলে ম্যাচটা জমে ওঠে।

শেষ ৩০ বলে ২০ যোগ করে বাংলাদেশ হারিয়েছে ৫ উইকেট। সেখানে জিম্বাবুয়ের শেষ পাওয়ার প্লে-তে ৪৯ রান পাড়ি দিতে এসে ৪৩ রানে হারিয়েছে ৪ উইকেট। আশ্চর্য হলেও সত্য, দু'দলের কেউ ২০ ওভার পাড়ি দিতে পারেনি। 

 ১৭তম ওভারের প্রথম বলে জোনাথন ক্যাম্পবেলকে (২৭ বলে ১ চার, ২ ছক্কায় ৩১) ফিরিয়ে দিয়েও ওই ওভারের শেষ দুই বলে ফারাজ আকরামের কাছে চার-ছক্কা খেয়ে ম্যাচটা জিম্বাবুয়ের হাতে তুলে দিয়েছিলেন সাকিব। তবে এক ওভারের শেষ স্পেলে (১-০-৭-১) ফারাজ আকরামকে (১০ বলে ১১) শ্লোয়ার ডেলিভারিতে ফাইন লেগে ক্যাচ দিতে মোস্তাফিজ বাধ্য করে ম্যাচে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে এনেছেন।

শেষ ৬ বলে ১৪ রানের টার্গেট জিম্বাবুয়েকে পাড়ি দিতে দেননি সাকিব পর পর ২ বলে দুই টেল এন্ডার মুজারাবানি (৫ বলে ৮) এবং নাগারাভাকে (১ বলে ০) ফিরিয়ে দিয়ে। অস্বস্তির ম্যাচে ৫ রানে জিতে সম্মান বাঁচিয়েছে বাংলাদেশ মোস্তাফিজ-সাকিবের শেষ স্পেলে।

১০ মাস পর টি-টোয়েন্টিতে ফিরে সাকিব টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ৬ষ্ঠ বারের মতো দেখা পেয়েছেন ৪ উইকেট (৩.৪-০-৩৫-৪)। আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে ৯ ম্যাচে ১৪ উইকেট শিকারে হৈ চৈ ফেলে দেয়া বাঁ হাতি কাঁটার মাস্টার মোস্তাফিজও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রত্যাবর্তন ম্যাচে তৈরি করেছেন ব্যবধান (৪-০-১৯-৩)।  

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন